Wednesday, July 18, 2018

একটি পরিকল্পিত হত্যা কাহিনী-১


২০১২ সালে ঠিক করছিলাম শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় এর 'অশরীরী' গল্প নিয়ে একটা শর্ট ফিল্ম বানাবো। আমাদের তখন শরীরে জোয়ার, মাথায় জমাট বারুদ আর মনে ছাই চাপা আগুন, তা স্ক্রিপ্ট বানিয়ে ফেললাম, দু একজন অভিনেতা অভিনেত্রীর সাথে কথাও বলা হল। আমাদের সমস্যা ছিল টাকার, শর্টফিল্মের বাজার নেই কে দেবে টাকা? আমরা তখন স্বপ্ন দেখি বাজার তৈরী করব। গল্পটার জন্য একটু রিমোট লোকালয় দরকার ছিল, তা আমরা সে বছরই দোলের সময় শান্তিনিকেতন গিয়ে একটা বাড়ি দেখেছিলাম যেটা হলে আমাদের লোকেশনের ষোলকলা পূর্ন হয়। 


আমি, অভিজিৎ, বিশু আর রানা মিলে চললাম বাড়িটা বাগাতে, একবন্ধু বাড়িটার মালিকের খোঁজ যোগাড় করে দিয়েছিল। 
কলকাতা ছাড়লে যে কাজই থাকুক না কেন আগে খোঁজ পড়ে মদের। আমাদের একটা থাকার জায়গা ছিল রতনপল্লী (পল্লী বা পুর হবে মনে নেই)তে। পৌঁছে সেদিন রাতটা নেশা করে আর মালিকটির সাথে কথা বলা হয়নি। পরদিন ফোন করায় ভদ্রলোক বললেন, তিনি আজ শান্তিনিকেতনের বাইরে কাল আসবেন। আরেকটা দিন পাওয়া গেল মদ খাওয়ার জন্য। 
দুপুরবেলার দিকে বসে বসে অকারণ সময় নষ্ট করছি, একটা লোক এসে আমাদের দরজার কড়া নাড়ল, দরজা খোলাই ছিল তবুও কড়া নাড়ল। কি ব্যাপার জিজ্ঞাসা করায় অদ্ভুত ফ্যাসফ্যাসে গলায় বলল, তাকে আমাদের ঘরদোর সাফ করার জন্য পাঠানো হয়েছে। আমাদের এক খাস বন্ধুর দিদি বিশ্বভারতীর প্রফেসর অতএব আমরা একটু খাতির পাই। 
বিশুই আমাদের মধ্যে একটু বলিয়ে কইয়ে, জিজ্ঞাসা করল, 'কি নাম তোমার?'
-চন্দন। এক কথায় উত্তর দিল।
ঘর পরিষ্কার করার লোক নিজেই এত নোংরা আমার দেখে ভাল লাগল না। আমরা নিজেদের মত রাতের শুটিং কেমন করে করব? কতটা আলোর দরকার, বিনা পয়সায় কিভাবে অশরীরী কে মুর্তমান অথচ বিদেহী দেখাবো এসব প্ল্যান করতে লাগলুম। লোকটা বার কয়েক আমাদের দিকে তাকিয়ে দেখল কিন্তু কোন অভিব্যক্তি দেয়নি। অদ্ভুত দেখতে লোকটাকে, প্রায় 6ফুট হাইট, মানানসই পেটানো চেহারা, হাতের পাঞ্জাটা লোভনীয়, একসময় বাইসেপ ট্রাইসেপ দেখা যেত নিঃসন্দেহে, আমরা মৃগয়ার মিঠুনে চলে গেলাম। 
আমরা যখন মিঠুন থেকে জ্যাকি শ্রফ, সঞ্জয় দত্ত, সালমান খান হয়ে হৃতিকে আসব আসব করছি তখন লোকটা একেবারে সামনে এসে দাঁড়িয়েছে, কিছু একটা বলব বলব ভাব। 
- কিছু বলবে? অভিজিৎ জিজ্ঞাসা করল।
-ফিলিম বানাবেন?
এর কাছ থেকে 'ফিলিম' শুনব আশা ছিলনা, বললাম, হ্যাঁ। 
ঘাড় নেড়ে চলে গেল, কি বলব বুঝতে পারলাম না।
বিশু হচ্ছে আমার পৃষ্ঠপোষক, মন্ত্রণা দাতা এবং সমালোচক। তবে ওর লোকেশন দেখতে আসার কোন দরকার ছিলনা। তখন আমরা ছিলাম কাঠ বেকার আর আমাদের যৌবন ছিল আরো শুকনো। বিশু এসেছিল সেই গামবাট যৌবনকে খোয়াই নদীতে এপিঠ ওপিঠ করে ভিজিয়ে নিতে। 
সন্ধেবেলা আবার আসর বসব বসব করছে এমন সময় বিশু হাঁফাতে হাঁফাতে এসে বলল, ' চ, চ একটা সেক্সি জায়গায় নিয়ে যাবো, ডবকা চাঁদ দেখতে দেখতে ভদকা খাবি'। মধু আর চাঁদের কম্বিনেশন যখন ভাল, তখন মদ আর চাঁদের কম্বো নিশ্চয়ই আরো ভাল হবে। যেতে যেতে জানতে পারলাম বিশু দারুন গাঁজার ব্যবস্থা করেছে। 
যেখানে গিয়ে বসলাম জায়গাটা অসম্ভব বা হয়ত ঐ সময় কোন এক কারণে ওরকম মায়াবী হয়ে ছিল। দু-তিন পেগ খেয়ে মনে হচ্ছিল এখানেই কিন্নরীরা বিশেষ সময়ে নামে বোধহয়। তখনও গাঁজা আসেনি, শুনলাম ঐ চন্দনকে কিকরে যেন পটিয়ে গাঁজার ব্যবস্থা করেছে। চন্দন আরো মিনিট 20 পরে সিলিউট থেকে মহাকাল সদৃশ ল্যান্ডস্কেপ তৈরী করে সামনে এল।
অভিজিৎ মদ খেয়ে চুপ করে থাকা প্র্যাকটিস করে, আর জিজ্ঞাসা করলে বলে, 'ভাবছি'। এই রকম চাঁদের আলোর নীচে আমার যাবতীয় আদিম ইচ্ছে গুলো আমাকে নাগপাশের মত বেড়ে ধরতে লাগল। গাঁজা বানানো হয়ে গেছে, বিশু টানছে, অভিজিৎ বলল পরে খাবে, রানা ক্যামেরা নিয়ে কি একটা করে যাচ্ছে, আমি একটা সিগারেট ধরিয়ে ধোঁয়া ছেড়ে সেই ধোঁয়ার পিছন পিছন দৃষ্টি নিয়ে গিয়ে দেখলাম দুটো গাছের ফাঁকে ধোঁয়াটা মিলিয়ে গেল আর একটা মায়াবী আলো তৈরী হয়েছে সেখানে আমার মনে হতে লাগল ওই খান থেকে একটি নারী এসে আমাকে ইশারায় তার সাথে যেতে বলবে, যাদের বয়স বাড়ে না... যৌবন রোজ রোজ ব্যবহারেও অক্ষুন্ন থাকে তারা...।
চিন্তায় ছেদ পড়ল, চন্দন আমার গায়ের একেবারে কাছে এসে জিজ্ঞাসা করল, একটা দামী সিগারেট দেবেন? দিলাম! দেখলাম অভিজিৎ ভাবসাগর থেকে ভেসে উঠেছে, বিশু পা ছড়িয়ে একটু লেদরে গেছে। চন্দন সিগারেটে একটা দেড় বিঘত লম্বা টান দিয়ে বলল, এসব খাসা সিগারেট টানলে দমে লাগেনা, বলে আবার টানতে লাগল। একটা সিনেমার গল্প শুনবেন?- আনমনেই বলল। ভাবার চেষ্টা করতে লাগলাম সিনেমার গল্প বলতে লোকটা কি বোঝাতে চাইছে।
ক্রমশ...

1 comment:

  1. MGM National Harbor | Dr.MCD
    MGM National Harbor 남양주 출장마사지 features 공주 출장안마 a casino hotel, full 의왕 출장샵 casino games and entertainment. The 아산 출장샵 hotel features all the major casino games, poker, roulette, and Address: 1 Borgata 계룡 출장샵 Way, Atlantic City, NJ 08401

    ReplyDelete

কুলের আচার ও পুরাতনী চিঠি

 মনে করুন, এভাবেই সময় চলছে... তাতে তো আর জীবন কাকু থেমে থাকবে না। এগিয়েই যাবে। মনে করুন এরকম ভাবেই ২০২৫ এর বসন্ত এসে গেছে, এভাবেই ঘরে বসে কা...