Monday, February 12, 2018

এই তো জীবন কালিদা...

পেত্থম ভুল করেছিল শকুন্তলা। দেখছিস নাম দুষ্মন্ত, এমনিই একটা দুষ্টু দুষ্টু ভাব তুই মা... ইয়ে মানে পাকামি মারতে গেলি কেন? তারপর ভুল করল এই আমাদের কালিদা, তা বাপু বউরা অমন একটু আধটু অপমান করেই থাকে। তোকে কে বলেছিল ধাঁ করে 'অভিজ্ঞান শকুন্তলম' লিখতে? আর লিখলি লিখলি অমন করে কেউ দুষ্মন্তর সামনে শকুন্তলাকে ইন্ট্রো দেওয়ায়? নামেই বলে দিচ্ছে রাজা গজা যাই হোক দুশমন তো।
তখন এতো সেন্সর, কার্নি সেনা, পহলাজ নিহালনি ছিলনা বলে ভরপুর সেক্স সিন্ ঢেলে দিয়ে কালিদা পার পেয়ে গেল।কিন্তু কালিদা পরে বুঝেছিলেন যে, সে রাতে বউ এর কথায় চেগে যাওয়া ঠিক হয়নি।
সেই ছোটকালের একটা জোক ছিল, এক ছেলে তার বাপের কাছে সাইকেল চাইল, বাপ্ জিজ্ঞাসা করল ওমুকটা তমুক জায়গায় ঠেকে? ছেলে, বাইক চাইল বাপের সেই এক প্রশ্ন... শেষ টুকু আশাকরি লোকে জানে, আমি আসল কথায় আসি। 
সেই থেকে ইস্তক বাঙালির কাছে যৌনতা আর বিবাহ সমার্থক হইল।🤔🤔🤔💭

ভ্যালেন্টাইন ডে'র প্রাক্কালে বা পুরোনো কিছু কথা...

সে হিসাব করে বলতে গেলে বহুকাল আগের কথা বা 2009 সালের ও হতে পারে। আমি একাই ছিলাম, তখনও আমার শনির সাড়ে সাতি লাগেনি। রোম্যান্টিক জায়গা আমার কোনকালেই ভাল লাগেনা। কোন জায়গায় গেলে রোম্যান্স আসবে ওসব 'বুর্জোয়া' ব্যাপারে আমার বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। আমি মাঠে, ঘাটে, বনে-বাদারে, রোম্যান্টিক ফিল্ড ক্রিয়েট করে নিতে পারি, এই আমার চিরকেলে বিশ্বাস। আরেকটু লম্বা হলে, একটু রোগা হলে... যাক পুরুষ মানুষ আফসোস করেনা।
তো আমি একটা পার্কের মধ্যে দিয়ে হাঁটছি, কোন অনির্দিষ্ট কারণই হবে, আর আদারে বাদারে অপকম্ম আর ন্যাকামি দেখে দেখে গা জ্বলে যাচ্ছে। দুপুরের সময় ঐ সময় যে অত আদিখ্যেতা হতে পারে না দেখলে বিশ্বাসই করতে পারতাম না। যাক একটা ফাঁকা বেঞ্চ দেখে বসলাম। মুখ টুক মুছে পাশে তাকিয়ে দেখি, এক কৃশকায়, দীর্ঘদেহী, আবক্ষলম্বিত শ্মশ্রুগুম্ফ সম্বলিত এক বুড়ো বসে আছেন। এক সেকেন্ড আগেও দেখিনি। তবু ভাল! বুড়োর বয়েস দেখে আন্দাজ করার উপায় নেই, একটা বয়সের পর বয়সের বাড়টা আর বোঝা যায়না, চেহারা ঝিরকুট্টি মেরে যায়, এর অনেকটা সেরকম। দেখলাম বুড়ো একা একা খিটখিট করে যাচ্ছে। বৃদ্ধাশ্রম কেস ভেবে কিছু আর জিজ্ঞাসা করলাম না, আরো একটু পর দেখি বেশ জোরেই বলে উঠল, "না নাহ সব উচ্ছন্নে গেছে!" আমি ভাবলাম এই বয়সে বুড়োদের একটু চরিত্র স্খলন হয়, পুরনো স্মৃতি একটু ঝালিয়ে নিতে এসে উলটো কেস হয়ে গেছে। একবার ভাবলাম একটু ফাজলামি করি, তারপর চেহারার গঠনটা দেখে ঠিক ইচ্ছা করলনা, দুধ ঘি, হাওয়া বাতাস, সব অর্জিনাল শরীরে সেঁধিয়েছে কিনা, ট্যাকচার টা ঠিক দাদু দাদু টাইপ না।
চলেই যাচ্ছিলাম, বুড়ো খ্যাক করে পিছু ডাকলেন, "সময় হয়ে গেছে বুঝি?"।
- কিসের সময়?
- এই চারদিকে যা হচ্ছে, তুমিও যোগফল বাড়াবে।
- ইয়ে না, আমার আবার ভিড়ের মাঝে...
- তা বাপু তোমাদের কি নিজস্ব বলতে কিচ্ছুটি থাকতে নেই?
- মানেটা যদি একটু হাল্কা করে...
- মানে আবার কি? বিদেশীদের ঝোলানো গাজর দেখলেই এই হ্যাংলাপনা ক্যানো বাপু? আমাদের কি প্রেম টেমের কোন ইতিহাস নেই নাকি?
আমি আর কি বলব? অনেক ভেবেও কৃষ্ণ ছাড়া আর কাউকে পেলাম না, কিন্তু ওকে তো আর ম্যাঙ্গো পিপলদের মধ্যে ধরা যাবেনা, তাহলে আবার ফেট্টি বেঁধে লোকজন নেমে পড়তে পারে।
শুনে বললেন, "আরে কৃষ্ণর কথা রাখো ও ছাড়া আর কেউ প্রেম করেনি নাকি? অবশ্য যা নীচে নেমেছ তাতে তো পুরোনো খবর কিছু রাখো বলে মনে হচ্ছেনা।
কথাটা সিঙ্গুলার না প্লুলারে মিন করলেন আর জিগালুম না।
- কেন আমাদের বিশু প্রেম করেনি? কি প্রেম করেছে...!
আমি ভাবতে লাগলাম বিশু আবার প্রেম করল কবে, ও তো বাসে উঠে ঝাড়ি মারত।
- ওহঃ সে কি প্রেম, লোম, দাড়ি গোঁফ পর্যন্ত খাড়া হয়ে যেত। তাও আবার কে না স্বর্গবেশ্যা মেনকা।..
কার কথা বলতে চাইছেন লোকটা? ধন্ধ হতে জিজ্ঞাসা করলাম, "ইয়ে, বিশুর পদবীটা...?"
- তখন ওসব ঠুকনো ব্যাপার ছিলনা আমাদের কালে, বিশ্বামিত্রের নাম শোননি?
আমার তখন বিচমকা লেগে গেছিল, বিষম আর চমকানি একসাথে।
- বিশ্বামিত্রের প্রেম কি একটা নিদর্শন হতে পারেনা?
একটু সামলে নিয়ে বললাম, "হতে পারে তো বটেই, তবে কিনা ওঁর হুশ ফিরে আসার পর মেনকাকে দূর করে দিয়েছিলেন শুনেছিলুম".
-ওসব ঐ দিপুটা লিখেছে তো? পাকা ছেলে!
কাকে বললেন কে জানে!
- না না বইতে ওরকম লিখতে হয়, মেনকা তো স্বর্গবেশ্যা ছিল, ওদের মেয়াদ থাকে, তাও বিশুর শাপের ভয়ে কিছুদিন ছিল। চলে যেতে বিশুর সেকি দুঃখ! তা সেটা যদি নাও হয় যযাতি প্রেম করেছিল।
- আজ্ঞে (বেরিয়েই গেল), বিয়ে হয়ে গেলে প্রেমের যবনিকা পড়ে যায়।
- বেশ তবে বৃহস্পতির ছেলে কচ আর শুক্রের মেয়ে দেবযানী র প্রেমটা?
- কচ যে আউটরাইট রিজেক্ট করে দিল?
অঃ, বলে নিজের মনে আর আমার দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে কি একটা ভাবলেন, তারপর বললেন, "ভাবছিলাম বলবনা, কিন্তু তুমি আর কোন উপায় রাখলেনা"।
আমি জিজ্ঞাসা চিহ্নের মোট মুখ করে তাকিয়ে রইলাম।
-আমিও প্রেম করেছিলাম এককালে, আর জমেওছিল খুব।- বলে যেন নিজের মনেই গোঁফের ফাঁকে একটু স্মৃতি বিলাসিতা করে নিলেন।
আমি বললাম, "আজ্ঞে নিঃসন্দেহে সে প্রেম জমাটি কেন জমাটির বাপ্-ঠাকুদ্দা ছিল, কিন্তু আপনি কে যদি একবার দয়া করে...
-অঃ, বলিনি বুঝি! আমি হলাম দিপুর বাপ।
-দিপুটা??
-তা বাপু তোকে দেখে মনে হল...
আমি মনে মনে বললাম- "ওরম মনে হয়"।
-দিপুর ভাল নাম হল দ্বৈপায়ন।
আমার হাঁ মুখ দেখে একটু বিরক্ত হলেন।
-ওরে ওই তোদের মহাকাব্য অচেনা, মহাভারত পুরুর তস্য নাতি পুতিদের মারামারি নিয়ে লেখা...
কি বলে কিরে বুড়োটা, ব্যাসদেবের বাপ্ মানে পরা..
-না না, এখন জ্যোতিষ শিখতে এলে আমি শেখাবো না।
পায়ে পরে গেলাম, বললাম- "দাদুগো গোটা কোটি প্রশ্ন আছে আর জ্বালাবোনা"।
-আজ ছাড়, আজ মুড্ নেই।
-আচ্ছা।
-কিন্তু আমার কথাটার যে উত্তর করলিনা?
একবার দাদু বলে ডেকে ফেলে সাহস হয়ে গেছিল, তারপর উনিও বেশ তুই টুই করে বেশ একটা ইয়ে ভাব চলে এসেছিল, বললাম, "তুমি আবার প্রেম করলে কোথায়? একটা বর দিয়ে, কুজ্ঝটিকা তৈরী করে তারপর টিক টিক..."
একটা বিরাশি শিক্কার চর খেয়ে দেখলাম বাঁ হাতের তালুতে একটা রক্তমাখা মশা। সন্ধ্যে হয়ে এসেছে, তখনও ন্যাকামি চলছে। বাড়ি ফিরে আসতে, মা জিজ্ঞাসা করল, "মারামারি করে এলি নাকি গালে ৫ আঙুলের দাগ?"
আমি তাড়াতাড়ি ঘরে ঢুকে গেলাম।

পুনঃ ফেব্রয়ারি মাস এলে আমার জ্যোতিষ না শিখতে পারার আফসোশটা এমন করে ভেংচি কাটে কি বলব!

কুলের আচার ও পুরাতনী চিঠি

 মনে করুন, এভাবেই সময় চলছে... তাতে তো আর জীবন কাকু থেমে থাকবে না। এগিয়েই যাবে। মনে করুন এরকম ভাবেই ২০২৫ এর বসন্ত এসে গেছে, এভাবেই ঘরে বসে কা...