Friday, October 6, 2017

শিরোনামহীন

কবি হওয়ার কোন বাসনা আমার কোনকালে ছিলনা।
কবিদের সর্বাঙ্গে কেমন একটা নরম প্রলেপ দেওয়া থাকে বা তাঁরা জড়িয়ে নেন, আমার একদম ভাল্লাগেনা।
আমার কাছে কখনও মাঝরাতে, কখনও ঝিম দুপুরে , ভেজানো দরজা ঠেলে বোবা শব্দরা আসে,
তাদের কোমর ভরা যৌবন
গলার ভাঁজে ভাঁজে গলে পড়া তরল কাম।
হ্যাঁ, আমি এরকম, যা ভাবলে কষ্ট হলে হোক।
আমি শব্দ কে সশব্দে চুমু খেয়েছি,
ঠেসে চেপে ধরেছি দেওয়ালে।
তারপর থেকে এই খেলা চলছে...

Monday, August 28, 2017

হঠাৎ করে


তোমার জন্য ‘আরব্যরজনী’ লিখব এমন এলেম নেই আমার।
তোমার জন্য ‘এক হাজার পদ্য’... নাহ, ওটা তারাপদ বাবুরই থাক।
মাঝে মাঝে স্বপ্ন সায়রে, সুপ্ত আদরে এই কথা ছোঁয়াছুঁয়ি খেলা
এই বেশ, এই থাক।

তোমায় আলাদা করে শোনানোর মত আলাদা করে আমার কিছু নেই।
আমার কোন দেশ নেই, ছিলনা কখনও, কস্মিনকালে
আমার কোন বুড়ি পিসি ছিলনা। কুলের কাঁটায় ছড়েও যায়নি কপালে,
গিনিপিগ কেন, ডালকুত্তার বাচ্চাও পুষিনি কোনকালে।
ডিঙ্গি নৌকায় চড়ে নদী পার হওয়ার গল্প আমি শোনাতে পারবনা, জানা নেই।
এই হঠাৎ পাওয়া দু-চারটে শব্দে তোমাকে ছুঁই,
এই তো দারুন বন্দোবস্ত।

পুরোটা ছিলনা, মাঝে খানিকটা জলে ধুয়ে ঘষটে গেছে
হঠাৎ করে আবর্জনার মধ্যে পাওয়া হলদে প্যাডের কাগজে।
-উপরে লেখা ছিল, ‘তোমার জন্য ১০১’।

১০১ টা হয়ত হয়ে যাবে টেনেটুনে, তারপর নৌকা বানিএ একদিন ভাসিয়ে দেব।

যদি পেয়ে যাও হঠাৎ করে, নেহাতই তোমার জন্য বলে।

Sunday, August 27, 2017

গঙ্গারামের সমস্যা ২

শনি গ্রহের অস্থানে কুস্থানে দৃষ্টি থাকলে শুনেছি বিয়ে প্রেম ইত্যাদি মায়া মোহ ঘটিত সুখ প্রাপ্ত হয়না। গঙ্গারামের দুঃখ টঙ্গে উঠলে মাঝে মাঝে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলেন, “কি আর করা আমার যে সপ্তমে শনির বক্রদৃষ্টি”। এসব উনি মানেন বেশ, আমারও মনেহয় ওঁর রং আর ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড ছাড়া আর কিছু তো খারাপ ছিলনা, তা এমন পুরুষের কি বিয়ে হয়না? দেদার হচ্ছে, পাইকারী দরে হচ্ছে। তবে আমার আরো একটা আরো একটা সন্দেহ আছে, বিয়েটা হলনা বলে গঙ্গারাম যতটা হাহুতাশ করেন ততটা কিন্তু সেই নারীকে নিয়ে করেন না, সাধারণত উল্টোটাই হয়ে থাকে, তাহলে কি প্রেম ঘটিত কোন কেস! গঙ্গারামকে যতটা চিনেছি আমার ধারণা তখন সে সময়ে উনি বোধহয় নিজেই চাননি, তাই কবি? কি জানি। এরকম কিছু চিন্তা কাজের মধ্যে মধ্যেই আমার হয়ে চলেছিল। গঙ্গারাম আবার এলেন দিন সাতেক পর। চোখের নীচে কালি কিন্তু চোখদুটো উজ্জ্বল, খটকা টা রয়ে গেল।
গঙ্গারামের সমস্যা হল কিছুতেই খুলে কথা বলবেন না, অনেক চেষ্টাতেও রা করাতে পারিনা, একটু তরলীকৃত করে কথা বার করব তা উনি আবার ওসব ছুঁইয়ে দেখেন না। তা হঠাৎ কি মনে হল বললাম, ‘শনি তো এবার সিধে হচ্ছে, এবার আপনার সব জট ছেড়ে যাবে’। ওষুধে কাজ হল, আনমনে বলে ফেললেন, “কই আর হচ্ছে, যাও বা একটু শুরু হল, তা দুম করে ফুরিয়ে গেল”। লোক্টা বলে কি নির্ঘাৎ মদন দেবের চক্রান্ত।এবার চেপে ধরলুম গঙ্গারামকে।
একটু পিছিয়ে যেতে হবে আমাদের, ফ্যালাশব্যাক। তখন গঙ্গারাম যুবক, শ্রীমতি নামের একটি মেয়ের সাথে গঙ্গারামের ইয়ে হয়ে যায়। তা বেশ চলছিল চিঠি পত্তরে প্রেম, তখন সেরকমই রেওয়াজ ছিল, কিন্তু মেয়ের বাবা একেবারে ছবি বিশ্বাস। যখন দেখলেন মেয়েকে এমনিতে সামলানো যাচ্ছেনা বাড়ি বদলিয়ে অন্য জায়গায় চলে গেলেন, গঙ্গারাম কিছু করার আগেই গল্পটার ইতি হয়ে গেল। সেই দুঃখে গঙ্গারাম আজীবন ব্রহ্মচর্য নিলেন। এবার বর্তমান সময়ে (ও একটা কথা যারা কূট প্রশ্ন ভাবছেন তাদের জন্যঃ- ‘যারা গঙ্গারামের দেখা পায় শুধু তারাই জানে, গঙ্গারামের বয়স বাড়েনা’)।
বেশ কিছুদিন আগে একদিন দুপুরে গঙ্গারাম গড়িহাটের মোড়ে দাঁড়িয়ে ভাবছেন ডাবের জম খাবেন না লস্যি, এমন সময় একজন কে দেখতে পেলেন, হুবহু, অবিকল শ্রীমতির মত শুধু বয়সটা যেন সামান্য বেড়ে গিয়েছে, তাতে ক্ষতি কিছু হয়নি বরং চোখে মুখে ব্যক্তিত্বের ছাপ যেন বেড়ে গিয়েছে। গঙ্গারামের হৃতপিন্ডটা একলাফে টাকরায় এসে আটকেছিল, নেহাত তেষ্টায় জিভটা শুকিয়ে গেছিল বলে পিছলে বেড়িয়ে যেতে পাড়েনি। ঐ এক লহমা, তার মধ্যে ফ্ল্যাশব্যাক ফ্ল্যাশইন, মনে ভেজা ভেজা ভাব, চমক এতসব ভাবনা খেলে গেল যে মহিলা কোন্দিক দিয়ে কোথায় হারিয়ে গেলেন গঙ্গারাম খুঁজে পেলেন না আর।
কথায় আছে, ‘বাশ তুমি কেন ঝাড়ে, এসো আমার **’ আমার যে বংশ প্রেম এমনধারা ছিল তা কে জানত? গঙ্গারাম তাঁর দুঃখবিলাশ নিয়ে নিজের মত ছিলেন কি দরকার ছিল জানতে চাওয়ার! এবার তার নাম জানিনা, দেখতে কেমন জানিনা (ওরকম প্রচন্ড সুন্দরী তো গড়িয়াহাটে, যাদবপুরে, পার্কস্ট্রীটে মায় প্রায় গোটা কলকাতায় আকচার ঘুরে বেড়াচ্ছে), তাকে নাকি আমায় খুঁজে দিতে হবে। বাঁশটা ইমেজিন করুন।
এসব কথা বলে, দুর্ভাবনায় ফেলে কখনই গঙ্গারাম বসে বসে মজা দেখেন না, ওঁকে তখন আর জাস্ট পাওয়া যায়না, আরে বাবা দুচারটে শলাও তো করা যেতে পারে।

ক্রমশ...  

গঙ্গারামের সমস্যা

গঙ্গারামকে চেনেন? সেই যে সেবার তার বিয়ে হলনা বিভিন্ন ছেঁদো কারণে, থাক সেসব কথা। বেচারার ভারী দুঃখ, এখানে সেখানে ঘুরে বেড়ায়, লোকে ভালো-মন্দ ভাবে। গঙ্গারামের এসব এহ বাহ্য ব্যাপারে গা নেই, কিন্তু তার মনে শান্তি নেই। গঙ্গারাম জীবনে বিশেষ কিছুই চায়নি শুধু একবার বিয়ে করতে চেয়েছিল, তাও সেটা একটা সামান্য পদ্যের জন্য আটকে গেল। তার হবু শ্বশুর মোটেই জানতে চাননি সে পাত্র হিসাবে কেমন বা কি তার বংশ গরিমা, কবি মশাই আপন খেয়ালে সেসব গূঢ় তথ্য পাব্লিক করে দিয়ে একেবারে হাটে হাঁড়ি ভেঙ্গে দিলেন।কবির বক্তব্য সংক্রান্ত জটিল প্রশ্নটা সেই থেকে ইস্তক পরিবর্ত্নের আগে অবধি বাংলা পরীক্ষায় আসত।
আমি মাঝে মাঝে গঙ্গারামকে পাই বুঝলেন। পাগলের মত সে ঘুরে বেড়ায়, কি বলে কেউ বোঝেনা, তবু খুব দুঃখে যখন তার কানের পিছনটা নীল আর হাতের তেলো শুকিয়ে যায় তখন সে আমার কাছে আসে। আমি দু-একটা প্রেমের কবিতা লেখার চেষ্টা করেছি, সেসব কেউ পড়েনি আর যা লিখি তা বলার মতন নয় আর সেসব কবিতাও রিপু দুষ্ট বলে গুণীজনে। প্রেমের ঢালাও বাজারে এটুকুই আমার অব্দান তবু উনি আমার কাছে আসবেন। অত বয়ঃজ্যষ্ঠ লোক তাঁকে জ্ঞান দেওয়া যায় বলুন?
এবার কি হল, এই কাল রাতেরই কথা, ট্যারেন্টিনো একখানা মার-কাটারী ছবি দেখে শুয়ে পড়েছি চোখে অনেকটা ঘুম আর একগাদা ভাবনা নিয়ে, হঠাৎ দরজাটা আলতো ফাঁক হয়ে গেল, গঙ্গারাম ঢুকলেন। সেই দুঃখী দুঃখী মুখ, সেই নীল কানের পিছন, শুকনো হাতের তালু। গঙ্গারাম আগে যা ছিলেন ছিলেন, বিয়ে ভাঙ্গার পর থেকে আপাদমস্তক নিপাট ভদ্রলোক, দুঃখে দুঃখে সময়জ্ঞান একটু ঘেঁটে গেছে এই যা। আমি চাইলেই ঘুমুতে পারতুম কিন্তু ঐ মুখ দেখে আর ইচ্ছা হলনা। চোখে একটু জল দিয়ে নিয়ে ওঁর সামনে গিয়ে বসলুম। আমি দুঃখের ইতিবৃত্তটা জানি বলে আর ধানাইপানাই না করে বললাম, ‘সে কবিও আর নেই, আর তার বংশেও এখন আর তেমন কেউ সাহিত্য চর্চা করেন না, বলেন তো আবার একটা মেয়ে দেখি? আপনি দেখে শুনে শুভ কাজটা সেরে ফেলুন’।

কিছুক্ষন আমার দিকে তাকিয়ে রইল গঙ্গারাম, কি ভাবল খানিক তারপর কিছু একটা বলব বলব করেও না বলে চলে গেল। আমার কেন জানিনা গঙ্গারামের চোখে অন্য কোন কথা আছে মনে হল। 

Friday, August 25, 2017

শারদীয়ার রাতে মাইতলামি

'সেই রাতে'

কাল একটা লেখা পুরোনো ব্লগ থেকে দিয়েছিলুম তাতে লেখা ছিল মানে লিখেছিলাম যে, আমাদের নাকি তেমন হাসির গপ্পো সেরকম কিছু নেই তাতে আমাগো #উইকি পিসেমসাই বলেছেন মানে কিছু স্মৃতি উস্কে দিয়েছেন, এ লেখাটা সেই মহাপ্রাণ কেই উৎসর্গীকৃত হইল।
গপ্পো ১-
আগে একটু ভূমিকা- ২০০৪ এ স্কুল ত্যাগের পর আমার এক বন্ধু বিচ্ছেদ ঘটে। তাও কিছুদিন নেতাজী নগর ডে কলেজে দেখা হত, সে তখন আবার জয়েন্ট দেবার উদ্যোগ করছে আর আমি কি করব জানিনা, শুধু জানি পাসকোর্সে পড়ব না। তারপর ঝপ করে ব্ল্যাক আউট।
কাট টু- একদিন, তখনো সাইকেল চালাই। রাতের দিকে বাড়ি ফিরছি, তখন ২০০৯ এর গোড়া খুব সম্ভব, আমার এই মহাপ্রাণ বন্ধুটির সাথে রাতের শেষ আড্ডাটা মেরে বাড়ি ঢুকব। তখন আমাদের মোবাইলে মিস কল মেরে ঠিক করা হত কে কোথায় দাঁড়াবে, আদৌ দাঁড়াবে কিনা। একবার মিস কল দিলে আসছি, তুই দাঁড়িয়ে থাক। আর একবার দিলে রাইফেল ক্লাব এর মোড় এরকম বিভিন্ন সাংকেতিক প্রক্রিয়া ছিল যা মানিক বাবু ‘ছিন্নমস্তার অভিশাপ’ এ লিখে যেতে পারেননি।
তা যেই দেখা হল, বলল, “এই প্যাঁচার সাথে দেখা হয়েছিল”। কোন একটা নিমত্রন বাড়িতে ওরা দুজন কোলাইড করে গেছিল। আমার নাম্বারটা প্যাঁচা নামক প্রাণীটিকে দেওয়া হয়েছে। তারপর ফোন, তখনও ফেসবুক সেরকম জনপ্রিয় হয়নি আমার বান্ধবী টান্ধবীও জোটেনি সেরকম তাই আমাদের ‘রাম-ভরত’ মিলাপ ঘটল মালঞ্চ সিনেমা হলে ‘রবনে বানাদি জোড়ি’ সিনিমা দেখা দিয়ে। ৪ বচ্ছরের বিরতির পর।
এরপর জন্মদিন, বিয়েবাড়ি, পুজো-পাব্বন, উৎসবে উপহারে আমরা মিলিত হতাম, রাণীকুঠি পুকুরপাড়, রাউলস ইত্যাদি জায়গায় মাল খেতে যেতাম, উফ সে কি দিন ছিল।
সব ভালরই একটা শেষ থাকে আমাদের শেষ হল মনে হয় ২০১৩ তেই। আমাদের গ্যাং এ ছিলাম আমরা চারজন আমি, প্যাঁচা, বিশে আর দাঁতের ডাক্তার। এর মধ্যে বিশে ২পেগ এর পর আর খেতনা আর আমার তিন নম্বর পেগ আআর পর থেকেই বলত, “এটার পর আর খাসনি”, দাঁতের ডাক্তার প্রত্যেক পেগের পর জিজ্ঞাসা করত, “তুই কি আর নিবি?”, প্যাঁচা যাই খাক লাস্টে একটা নিট রাম খেতই। সেবার চারজন ছিলাম না, তিনজন। ডাক্তারবাবু পড়তে গেছেন, অগত্যা আমরা তিনজন সপ্তমীর দিন ম্যাগ্নোলিয়ায় ঢুকলাম। বিশে কোনদিন তাল মিলিয়ে খাবার অর্ডার করতনা, করেনা। ও নিজের মত মটন এর কি একটা ডিশ আর সম্ভবত ভডকা বলেছিল। আমি মদের সাথে খাবারের মেনু নিয়ে ‘মোমো’ খাবার পর থেকেই ভীষন সাবধানী, তার উপর আমি তখন পাঁটা ছেড়ে দিয়েছি। প্যাঁচা রাম আর আমি হুইস্কি নিয়ে একটা চলল।
আমরা ঈষৎ টলটলায়মান অবস্থায় বেরোলাম এই ১১.৩০টা নাগাদ, তারপর ইচ্ছা হল একটু হাঁটা যাক। আমরা পার্কস্ট্রীট ধরে রেডরোড হয়ে হাঁটতে হাঁটতে ময়দানের সামনে এসে পড়লুম। 
'সদ্য মাতাল'

Add caption


মাতালে নর্দমা দেখলে শুয়ে পড়ে জান্তুম আমরা মাঠ দেখে ঢুকে পড়লুম কোন দুঃখে কে জানে! মাঠের ভিতর বেশ খানিকটা চলে গেছি, অন্ধকার আর শরতের রাতের গন্ধ মিলেমিশে মাতলামিটাকে একটা পোয়েটিক মোমেন্টামে ঠেলে দিচ্ছে, হঠাৎ দু-দুটো এইয়া বড় আলো এসে আমাদের উপর পড়ল আমি তো ঘাবড়ে গেছিলাম, বিশের কথা জানিনা ঐ আমাদের কান্ডারী হুশিয়ার ছিল, প্যাঁচা নির্ঘাত ভেবেছিল এইবার ‘ইউ.এফ.ও’ এসে গেছে ও বঙ্কুবাবু হয়ে গেছে। বিশেষ ভাবতে হয়নি বিশে বলল, “পুলিশ, ময়দানে ঢোকা বারণ ভুলে গেছিলাম”। আমার মনে মনে তখন ‘গাঁড় মারাগেছে’। এগিয়ে চলছি আমরা পুলিশ ভ্যানের উদ্দেশ্যে, হঠাৎ আমি ফিল করলাম আমার নিম্নাঙ্গে কোন সার নেই, এ একটা অদ্ভুত অনুভূতি হলে বুঝবেন। আমি বললাম, “ভাই আমার না বিচিটা আস্তে আস্তে ক্যামন ছোট হয়ে আসছে”। বিশে- “চুপচাপ এগিয়ে চল”। সে যাত্রায় পুলিশ বুঝতে পেরেছিল আমাদের কাছে গাঁজা, মদ, কোকেন, চন্ডু-চরস কিচ্ছু নেই আর আমরা ‘আদু’ ইয়ে কদু, তাই বলল, “যাও বাড়ি চলে যাও”।  না বললেও যেতাম কারণ নেশা ফেশা ফেটে যা-তা অবস্থা।
পুলিশ রাশিয়ান স্যালাড ফ্যালাড এর চক্করে মালের গন্ধটাও পায়নি।

বিঃদ্রঃ – এরপর আরো একটা বা দুটো লিখব। 

Wednesday, August 23, 2017

প্রেমের গল্প


একটু সরে বসুন’- মেয়েলি কন্ঠস্বরে ছেলেটি একটু সরে বসল। মেয়েটির হাতে একটা বই, প্রেমের উপন্যাস। ছেলেটি একটু আড়চোখে তাকিয়ে বইটার মলাট দেখতে পেল, গদগদে প্রেমের গল্প। ছেলেটি দীর্ঘশ্বাস সমেত একটি অনুচ্চ ‘হুঃ’ করল। মেয়েটি চকিতে ফিরে তাকাল...
ওঃ, স্থান কাল পাত্র এখানে অপ্রাসঙ্গিক। একটা ছেলে আর একটা মেয়ে পার্কে, পুকুর পাড়ে, উদ্যান-কাননে, ফ্লাইটের ওয়েটিং রুম যেখানে খুশি বসতে পারে। সময় লালচে ভোর, খর দুপুর, ভেজা বিকেল বা ঝিম ধরা রাত যা ইচ্ছে হতে পারে। ওদের নাম রিমঝিম আর রৌদ্র, বা ভানু আর সবিতা বা সোম আর শর্বরী যা কিছু হতে পারে।
রিমঝিম- ‘হু’ করলেন যে?
রৌদ্র- নাহ, আজকালকার বাজারে প্রেমের বই পড়ছেন...
মেয়েটি মলাটের পাতা খুলে দেখাল উপহারে পাওয়া।
রিমঝিম- আর আমি পড়ছিনা, বইটা হাতে আছে।
রৌদ্র- তাহলে কি ধরে নেব আপনি প্রেমের গল্পে বিশ্বাসী নন?
রিমঝিম- আদপেই না।
ওরা এরপর চা খেল।


‘দেরী হয়ে গেল একটু না?’- মেয়েটা হাঁফাতে হাঁফাতে জিজ্ঞাসা করল।
‘হ্যাঁ, এই মাত্র মিনিট ১৫ আমি একটু বেশি ঘুমাতে পারতাম এই যা’- ছেলেটার উত্তর।
‘কেন ওয়েট করাটা কি শুধু মেয়েদের কর্ত্তব্য?’- মেয়েটার গলায় ঝাঁজ।
সময়- স্বরোচিষ মন্বন্তরের কলিযুগ ই ধরুন।
স্থান- ENN Café.
পাত্র-পাত্রী- প্রদোষ এবং মালতী।
প্রদোষ- আপনি কি ক্যাপেচিনো উইথ আইরিশ হুইস্কি খাবেন?
মালতী- না, ব্ল্যাক কফি উইথ ব্রাউন সুগার।
প্রদোষ- বোঝাগেল।
মালতী- কি বুঝলেন?
প্রদোষ- না, আপনি বইটা পড়লেন তাহলে?
মালতী- পুরোটা নয়, ঐ নায়ক নায়িকার...
প্রদোষ- চুম্বন অবধি?
মালতী- হুম।
প্রদোষ- কেন চুমু কি খারাপ নাকি?
মালতী- না খারাপ বলিনি, তবে ওখানে লিখেছে, ‘নায়ক দুহাতে নায়িকার মুখটা তুলে ধরল, আর নায়িকা আশ্লেষে চোখ বন্ধ করে নিল’।
প্রদোষ- তাতে ক্ষতি কি হল?
মালতী- ওমা, মেয়েটা যে ওখানেই সব কিছু হেরে বসল।
প্রদোষ- তা বটে। আপনার আইডিয়াল প্রেমে চুমুর সিকোয়েন্সটা কিরকম হবে?
মালতী- চুমু ছাড়া হবে।  
ক্যাফের আলো হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেল।


স্থান- পৃথিবী
কাল- ১৫০০০০০০০ খ্রীঃপূঃ
পাত্র-পাত্রী- একটি পুরুষ ও একটি স্ত্রী T-rex (Tyrannosaurus Rex)
ভাষা- অনুদিত
পুরুষ- কিগো?
মহিলা- এখন?
পুরুষ- এখন তখন এর আবার কি?
মহিলা- নাহ, আমি একটু আগেই কালকের রাখা প্যারাসাউরোলোফাস এর কোমর দিয়ে জলখাবার করেছি এখন আমি পারবনা।
পুরুষ- সত্যি বলছি এখন একটুও জোর দেবনা।
মহিলা- ওসব তুমি রোজ বল, তারপর তোমার খেয়াল চাপলে তুমি খুব দৌড়াদৌড়ি করে কর।
একটা ঘঁৎ শব্দ হল পুরুষটির নাক থেকে আর একটি ফোঁস সুলভ শব্দ মেয়েটির নাক থেকে। তারপর পুরুষটি দেড় পা লাফিয়ে একটি মোক্ষম গুঁতো দিল মহিলাটিকে। শোনাগেল-
মহিলা- দেখলে কিরকম অসভ্য তুমি!
পুরুষ- এরকম অসভ্যতাতে তো তুমি দুহাজার বছর আগে কি দারুন আনন্দ পেতে।
মহিলা- ওরা দেখে ফেলবে না!
পুরুষ- ছেলে মেয়ে কেউ কোত্থাও নেই আমি দেখে এসছি।
T-Rex দুটি ঢালু জমি বেয়ে গড়িয়ে যেতে লাগল।


স্থান- শুটিং ফ্লোর
কাল- ২০১৭ খ্রীঃ
পাত্র-পাত্রী- কৃষ এবং শ্রী
পাত্রপাত্রী গভীরভাবে জর্জরিত, কেউ কাউকে ছাড়বেনা। শ্রী এর মুখটা কৃষ একটু তুলে ধরল,
শ্রী- এটা কি হল?
কৃষ- প্রেম।
শ্রী- তুই আগে থেকেই জানতি না?
কৃষ- তোকে বললে হত?
শ্রী- বলেই দেখতি।
কৃষ- এখন বললাম তো
শ্রী- কি বললি?
কৃষ- I love you.
শ্রী সোজা তাকিয়ে কৃশ এর দিকে, ঠোঁট দুটো হাল্কা কেঁপে উঠল।
‘কাট’, বলে একটা শব্দ এলো, ওরা দুজন দুজন কে ছেড়ে দিল। চারিদিকে ইতঃস্তত কিছু লোকজন নিজেদের কাজে ব্যস্ত। কৃষ শ্রী এর দিকে তাকালো, শ্রী একটু চোখ নাচাল।
শ্রী- দেখলি তোকে এত সুযোগ দিলাম তবু তুই পারলি না।
ওদের ঝগড়াটা আবার শুরু হল।


========================================================

লেখা পাওয়ার গল্প


লেখা পাওয়া অনেকটা সকালে ঘুম থেকে উঠে চা খেয়ে একটা সুন্দর বেগ আসার মতই ব্যাপার। আমার তো কোষ্ঠ কিলিয়ার হচ্ছিল না বহুদিন তাই আজ বেগ আসতেই নেচে উঠলুম আর কি।
আজকাল মানে বিয়ে হবার পর থেকে (হ্যাঁ আমি বিবাহিত, শোক প্রকাশ গোপনে করবেন/করিস/করো) আমি ইন্ডিয়ানে আর বসিনা। বিদেশীরা বেশিরভাগ ভাল অভ্যেস গুলোই ছেড়ে গেছে যা দেখছি। কোমোটে বসার সুবিধা হলো ধূম্রপান আর নিঃসরণ এর একটা সামঞ্জস্য থাকে আর আগে লোকে কোমোটে বসে কাগজ পড়ত আমি ফেসবুক ঘাঁটি। এইটেই আমার সবচেয়ে শান্তির সময়।
তা আজ এক ফেসবুক ফেমাস ছেলের (আমারই বয়সী)একটি লেখা পড়ছিলাম বাহ্যে গিয়ে, পড়তে পড়তে বেশ হাসলাম, ভাল লেখে নো ডাউট। লেখাটা পড়তে পড়তে ভাব এল, এমন কিছু আহামরি নয় আমার নিজস্ব কিছু ভাবনা, এই চাদ্দিকে যা হচ্ছে এইসব ব্যাপার নিয়ে। হ্যাঁ বলে রাখি সবাই যে বুঝতে পারবেন তা লয়, আমিও যে সবকিছু খোলসা করে লিখতে পারব তাও নয়, তবে আমি লেখাটা মনে মনে দেখেই হেব্বী আনন্দ পেয়েছি।


কাল রাতেই বাই চেপেছিল বুঝলেন কিন্তু ঐ একটা মানভঞ্জন পালা চলছিল, এরকম আমার হয়। যেকোন সুখই আমার কাছে প্রেয়সীর মত(নিত্য নৈমিত্তিক গুলো ছাড়া), তা প্রেমিকাকে তেল না মারলে সে কবেই বা কোনায় এসেছে? তা যাক, এবার আসল এবং একটু সিরিয়াস কথা। কাল একটু খুঁজে দেখছিলাম কে কি লিখছে। একজন বয়ঃজ্যেষ্ঠ দেখলাম যাকে বলে গপ্পো লিখেছেন, পুরোটা পড়তে পারিনি অনলাইন একটুখানি, তবে বইটা কিনে নেব বেশি দাম না। আরো পড়লাম, সবাই ঐ একটু ‘শ্রীজাত’, একটু ‘চন্দ্রিল’ একটু ‘অমিতাভ’ এরকম একটা পাঁচমেশালি স্টাইলে লিখছে আর যাই হোক না কেন সবেতেই ওই অ্যাওয়ার্ড উইনিং ছবির মত সম্পর্কের একটা চুদুরবুদুর থাকবেই। অবশ্য এরকমই হয়ত মার্কেট ডিম্যান্ড, সিরিয়াল তো হইহই করে চলছে। তবে হ্যাঁ একটা কথা সবার লেখার মধ্যেই যেন একটা ফুরিয়ে যাওয়া ভাব (ঐ একজনের বাদে) আমি যেটুকু পড়লাম তার মধ্যে। এটা যুগধর্ম হতে পারে, কোনকিছুই স্থায়ী বা গভীর নয়।ফুচকা, আলুকাবলি যত ভালই মাখুক পেট কি ভরে? সেদিন কোথায় যেন পড়ছিলাম ‘ফিকশন’ আর সেভাবে লেখা হচ্ছেনা।
আমার মাঝে মাঝে একটা আক্ষেপ হয়, আমার এক বন্ধুর সাথে এই লেখালিখির ব্যাপারে বেশ একটা দারুণ জয়েন্ট ভেঞ্চার হচ্ছিল সেটা আটকে গেল। বেশি দোষটা আমারই আর কিছুটা সময়ের। এরকম দুবার হল আগেরবারটা অবশ্য পুরোটাই সময়ের কারসাজি ছিল। তবে লিখে ফেলব।

এটা এর বেশি আর নয়, এবারে এতটাই হল (সবসময় যতটা ভেবেছি ততটাই বেরোয় না কিনা)। 

Friday, March 31, 2017

এমনি কয়েকটা পুরোনো লাইন

সেবারের শীতকালটা ভাল ছিল।
গা দিয়ে ধোঁয়া ওঠা প্রেম ছিল,
গন্ধ ছিল আদরে মাখো মাখো।
চিবুকে ঘাম ছিল, চোখ ছিল বোজা 
জিভ ছিল, দাঁত ছিল, স্তনের খাঁজে ছিল গরম নিঃশ্বাস 
বাইরে শেষ হচ্ছিল বিকেলবেলা

মনেহয়

প্রতিবার ঘুম থেকে উঠে,
প্রতিবার কাম সেরে উঠে...
মনেহয় আরো একটু বাকি।
প্রতিবার বিদায়ের আগে মনেহয়,
তোমায় আরো একটু ছুঁয়ে থাকি।
ঘন চুম্বন শেষে মনেহয়
আরো একটু আবেশে থাকি।
প্রতিবার কবিতার শেষে মনে হয়,
এটা থাক আর একবার অন্য একটা লিখি।

Friday, March 17, 2017

emnie

১. ধর্ম, সত্যবাদিতা, সহিষ্ণুতা, দয়া— এই সবই কলিযুগে মানুষের হৃদয় থেকে লোপ পাবে। 
(শ্রীমদভাগবৎ, ১২.২.১.)
২. কলিযুগে অর্থই মানুষের সামাজিক সম্মানের একমাত্র নির্ণায়ক হয়ে দাঁড়াবে।
(শ্রীমদভাগবৎ, ১২.২.২.)
৩. যৌনক্ষমতার ভিত্তিতেই নারীর নারীত্ব এবং পুরুষের পুরুষত্ব নির্ধারিত হবে কলিযু‌গে।
(শ্রীমদভাগবৎ, ১২.২.৩.)
৪. কি‌ছু বাহ্যিক আচারবিচারের ওপরেই মানুষের আধ্যাত্মিক অবস্থান নির্ভর করবে।
(শ্রীমদভাগবৎ, ১২.২.৪.)
৫. দরিদ্র মানুষকে অপবিত্র মনে করা হবে, এবং শঠতা গুণ বলে বিবেচিত হবে।
(শ্রীমদভাগবৎ, ১২.২.৫.)
৬. ধর্মচর্চার একমাত্র লক্ষ্য হয়ে দাঁড়াবে সামাজিক সুনাম অর্জন।
(শ্রীমদভাগবৎ, ১২.২.৬.)
৭. দুর্নীতিপরায়ণ মানুষদের মধ্যে যে সবচেয়ে নিকৃষ্ট সে-ই অর্জন করবে রাজনৈতিক ক্ষমতা।
(শ্রীমদভাগবৎ, ১২.২.৭.)
৮. খরার পীড়নে মানুষ সর্বস্বান্ত হবে।
(শ্রীমদভাগবৎ, ১২.২.৮.)
৯. অতিরিক্ত গরম বা অতিরিক্ত ঠাণ্ডা এবং রোগ, ব্যাধি ও মানসিক অশান্তির তাড়নায় মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠবে।
(শ্রীমদভাগবৎ, ১২.২.৯.)
১০. অসচ্চিরত্র মানুষ ধার্মিকের ভেক ধরে অর্থ উপার্জন করবে কলিযুগে।
(শ্রীমদভাগবৎ, ১২.২.৩৮.)

হল্লুমান

লীলা মজুমদার 'লঙ্কাদহন পালা' তে এই নামেই সম্বোধন করিয়েছিলেন পবনপুত্রকে।
উনি বীর, উনি ভদ্র (বানর সুলভ নন), উনি সাত্তিক, নিরহঙ্কারী এবং দেখা যাচ্ছে যে যুদ্ধটা স্রেফ একা দিন ৩/৪ এ নামিয়ে দিতে পারতেন, রামের জন্য ১৪দিন ধরে বোরডাম সহ্য করলেন। মাঝখানে একটু 'লু ব্রেক' এর মত গন্ধমাদন আনতে গেছিলেন এই যা।
আমাদের ওয়ার্ক এডুকেশন- ফিজিকাল এডুকেশন এর স্যার একটা গল্প করতেন (যখন যখন ওনার সাবধান-বিশ্রাম এর প্যানপ্যানানি ভাল লাগতনা)। লঙ্কা টঙ্কার যুদ্ধ মিটে গেছে, হনূমান কিষ্কিন্ধায় গেছেন, ওনার মায়ের সাথে একবার দেখা করতে। মা কে রামের বীরত্বের অনেক গল্প বলছেন, কিভাবে তিনি রাবনের মত বীরকে মারলেন ইত্যাদি ইত্যাদি। হনুমানের মাতৃদেবী পুজো-আচ্চা জাতীয় কিছু একটা করছিলেন আর গপ্পো শুনছিলেন, তো হাতের কাজটা সেরে নিয়ে বললেন, "তুই একটা আস্ত মুর্খ!" 
হনুমান তো হাঁ! একটা ইয়াব্বড় সাগর লাফালুম, এমনি ঢাউস একটা পর্বত বগলে করে নিয়ে এলুম, রামকে কাঁধে চড়িয়ে যুদ্ধু করালুম আর বলে কিনা আমি মুর্খ! 
তা অঞ্জনা (স্যার নাম বলেননি কোনদিন) দেবী বললেন, "হ্যাঁ, ভেবে দেখ তুই অতবড় পাহাড়টাকে না এনে টুকুস করে লঙ্কাটাকে এনে রামের দোরগোড়ায় রাখতে পারতি, বেকার এত খাটনি হতনা।"
আজ কি একটা কথা হতে হতে পুরাণের কথায় চলে গেছিলাম সেখান থেকে কথা এল সমস্ত পুরাণের বেস লাইন সেম, শুধু একটু ঘুরিয়ে ফিরিয়ে গপ্পো বলা হয়েছে, মায় চরিত্র গুলোও এক রকম। চীনা মিথোলজিতে 'মাঙ্কি কিং' বলে একটি চরিত্র আছে যিনি দুর্বিনীত ছিলেন (হনুমান ও ছোটবেলায় ছিলেন), দেবতারা তাকে বর দিয়ে রেখেছিলেন যে এই মাঙ্কি কিং মরবেওনা আর কেউ তার লোম ও ছিঁড়তে (এখানে কথাটা উপযুক্তার্থে ব্যবহৃত) পারবেনা। হনুমানেরও এরকম বর ছিল। এনাকেও মাঝে মধ্যে মনে করিয়ে দিতে হত কি ভীষণ ক্ষমতা এনার, হনুমানকেও দিতে হয়েছিল সাগর পার হবার সময়। মোদ্দা কথা হল হয় বাল্মিকী নয় চীনা ম্যান কেউ একজন ঝেঁপেছে আর নয়ত সে সময় কপিরাইট নিয়ে বাওয়াল হত না। 
একটু হেজিয়ে নিলাম, আর একটু। আসল কথা হল এই কথা বার্তা থেকে আমার মনে হল বাল্মিকী হনুমানের মত লোককে ঠিক স্পেস দেয়নি। ভারতীয় সাহিত্যের এই এক দোষ, বুদ্ধির গুন গাইতে বেশি ভালবাসে, গায়ে শক্তি থাকাটা যেন শুধুই দু-ফোটার অতিরিক্ত পোলিও খাবার ফল। দেখুন রাম, অর্জুন এদের নিয়ে কি আদিখ্যেতা! এমন যে যারা একটু বলশালী বা স্বাস্থ্যবান হন তারা যেন মাথামোটা হবেনই, এবং তারা প্রেম ট্রেমও করতে পারবেন না। বলরাম সারা জীবন মদ খেয়ে কাটালেন কেন? কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের সময় তীর্থে চলে গেলেন কেন? ব্যাসদেব চোখের সামনে কৃষ্ণ কে দিয়ে গুচ্ছ প্রেম করালেন আর ওনাকে? এদিকে অ্যাকিলিস কে দেখুন (ট্রয় সিনিমার ইন্ট্রোডাকশন সিনটার কথা মনে করুন)।
মানে এই মেগা সিরিয়াল ধারা আবহমান কাল ধরে চলে আসছে, নইলে কেউ একজন লিখতে পারত হনূমান বা ভীম কে নিয়ে কিছু একটা, এক রাজশেখর বসু ছাড়া আর কেউ হাতই দিলেন না। অবিচার। 
তা যাক কি আর করা! আমি উপেন্দ্রকিশোর এ আসি। ইনি ছেলেদের রামায়ণ, মহাভারত লিখেছিলেন (আমি দেখেছি এই নামকরণে ভুল করার ফলে মেয়েরা বিশেষ করে এই বই গুলো বোধহয় পড়েইনি)। ওখানে রামায়নের একটা জায়গায় রাবণ আর হনুমানের একটা মারামারির জায়গা ছিল। উফ! কি ভীষণ কম মারামারি লিখে কি এপিক মারামারির পর্যায়ে নিয়ে গেছেন কি বলব। গল্পটা এরকম, রাবন তো সেজেগুজে এসেছেন আজ রাম-লক্ষনকে কেলিয়ে লাট করবেন বলে। এসেই শক্তিশেল ছুড়ে দিলেন লক্ষণকে আধমরা করে। এইবার হনুমান ক্ষেপে গেলেন, গিয়ে এক লাফে রথে চড়ে রাবণের বুকে এক কিল। রাবণ মিনিট পাঁচেক অজ্ঞান। হনূমান এতটা ভাবতে পারেননি, দশটা মাথা, কুড়িটা হাত এক কিলেই কেলিয়ে যাবেন এটা দেখে ভেবলে গিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। রাবণ উঠেই হনুমানকে এক থাবড়া। এরপর আর মারামারির কথা লেখেননি। :( বাল্মিকী তো ওপথই মারাননি। আসলে গপ্পোটা এখানেই, রাবণকে মারার টেন্ডারটি রামের ছিল তাই কবি আর চাপ নেননি। কিন্তু ঐ প্রথমে লিখেছি, হনুমান লড়লে ৩থেকে ৪দিন লড়াই হত। রাবন যতবড় বীরই হোন হনুমান তো মরত না আর ঐ রেটে লাফালাফি করলে রাবন জাস্ট হাঁপিয়ে সীতাকে ছেড়ে দিত। একটাই প্রবলেম হত, মধু কবির অত ভাল কাব্যটা লেখা হতনা এই যা!

কুলের আচার ও পুরাতনী চিঠি

 মনে করুন, এভাবেই সময় চলছে... তাতে তো আর জীবন কাকু থেমে থাকবে না। এগিয়েই যাবে। মনে করুন এরকম ভাবেই ২০২৫ এর বসন্ত এসে গেছে, এভাবেই ঘরে বসে কা...