Saturday, April 28, 2018

অকারণ হয়তো বা

আমার কোনো দেশের বাড়ি নেই, ছিলোনা কোনোকালে।
আমার কোনো দেশভাগের স্মৃতি নেই,
আমার ছেলেবেলার সাথে কোনো কাঁটাতারের সম্পর্ক নেই।
আমার কোনো বুড়ি পিসি ছিলনা,
পোষা খরগোশ, কুলের কাটায় ছড়ে যাওয়ার দাগ এসব কিচ্ছু কোনোদিন ছিলনা নেই...

এরকম করে আমার একটা কবিতার প্রথম দিকের কয়েকটা লাইন ছিল। সে কবিতাটা কোনোদিন কোথাও পোস্ট করিনি সম্ভবত, আমার অনেক এলোমেলো খাতা ডাইরির মধ্যে কোথাও আছে।
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের একটা ইন্টারভিউতে পড়েছিলাম, উনি সত্যজিত রায়কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, 'আপনি লিখলেন বা ছবি আঁকলেন না কেন?' সত্যজিতের উত্তর ছিল খানিকটা আগুন্তুক ছবির ডায়লগের মত, 'আমি চাইলেও ওরকম বাইসন একটা পারবোনা, আর রবীন্দ্রনাথ যা লিখে গেছেন, তারপর আর কি লিখব!'-যতটা মনে ছিল সেরকম লিখলাম, মূল বক্তব্যটা এরকমই ছিল।
আমার উপরের কবিতাটা আমি তারাপদ রায়ের একটা কবিতা পড়ে উত্তেজিত হয়ে লিখেছিলাম, আমি সুনীলের একটা কবিতা পরে উত্তেজিত হয়ে বোধহয় আমার প্রথম কবিতাটা লিখেছিলাম। আমি যখন যা লিখেছি এভাবেই লিখেছি বেশিরভাগ। আমি শুনে বা পড়ে যতটা অনুপ্রাণিত হই, ততটা আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা নেই।
আজ অফিসে সেকম কোনো কাজ নেই, বনের মোষও অফিস চত্ত্বরে আসেনা, তাই ভাবলাম একটু পড়াশুনা করি অনেকদিন কিছু পড়িনা, তা আর কিছু না থাকুন pdf তো প্রচুর। আমি সুনীলের দুটো উপন্যাস অনেক আগে পড়েছিলাম, 'সন্যাসিনী ও এক কিশোর' আর দ্বিতীয়টার নাম মনে গল্পের নায়কের নাম ছিল রূহ। ঐ বইদুটো কোথাও পাইনা। তা খুঁজতে খুঁজতে একটা ইন্টারভিউ পেলাম, তাতে হেডিং হচ্ছে "লিখতে হয়েছে স্রেফ বেঁচে থাকার জন্য"। কি করবো এই কথা গুলো আমায় খুব পীড়ন করে, আমি তো পড়েই উদ্ধার করতে পারলাম না।
এরপর আমি এটা সেটা দেখতে দেখতে ঋতুপর্ণ ঘোষের 'ফার্স্ট পার্সন' পেলাম, লোকটাকে নিয়ে আমি আমি বাঙালীর মত উত্তেজিত নই, ২০১৩র পর আর 'সানগ্লাস' বেরোয়নি বলে ওঁর কোনো সিনেমায় আমি রিভিস্ট করিনি, ইচ্ছা করেনি। কিন্তু একটা লেখা সেখানে না বছরের একটা বাচ্চা ছেলে কি করে লোকনাথ ব্রহ্মচারী নামটার সাথে পরিচিত হল তার একটা গপ্পো আছে, কি বলবো রাগও হয় কাউকে বোঝাতে পারিনা।

Monday, April 23, 2018

ডাইরির একটা পাতার মত


আমি কয়েকটা বাংলা সিরিয়ালে স্ক্রিপ্ট ডায়লগ এসব লিখেছি, একটা সুপারহিট বাংলা সিনেমায় সহকারী পরিচালক হিসাবে কাজ করেছি, কাজ কিছুই করিনি শুধু দেখেছি আর বোঝার চেষ্টা করেছি। এবার আমি তেমন কিচ্ছু করে উঠতে পারিনি, অনেকে আমার গল্প টল্প পড়ে উত্তেজিত হলেও সে গল্প বালিশের তলাতেই র‍য়ে গেছে, তবু কেউ জিজ্ঞাসা করলে বলে ফেলি আমি স্ক্রিপ্ট লিখি। কেউ কেউ বেশ ফেনিয়ে গল্প জুড়ে দেয়, এই বিষয়টা নিয়ে বাঙালীর সবার একটা না একটা মতামত আছেই। আবার কেউ কেউ একটু বেশি পোঁয়া পাকা জিজ্ঞাসা করে, কোথা থেকে শিখলে? উত্তর অনেক রকম হতে পারে, দিতেও ইচ্ছা করে, তবু নিজের আয়নায় অবয়বটা পাল্টায়নি বলে যা ঘটেছে তার থেকে আংশিক বলি।
আমি তখন ল’কলেজে পড়ি থার্ড ইয়ার, কলেজের ম্যাগাজিনের জন্য লিখতে বলেছিলো। সেইসময় কালবেলা নামে একটা সিনেমা বেরিয়েছিলো গৌতম ঘোষের, ঐ সিনেমাটা দেখে ছাত্র আন্দোলন হেন তেন এইসব নিয়ে লিখতে বলেছিলো, আমার লেখাটা আমার মতে তার বিপরীত মুখী হয়ে গেছিল, কারণ সেই সময় থেকেই বুঝতে পারি আমি বুর্জোয়া। তবু কি করে যেন লেখাটা হিট করে গেলো। গড়িয়াহাটের প্যান্টালুন্সের পাশে দাঁড়িয়ে আমরা চা সিগারেট খেতে খেতে আড্ডা মারতাম, একদিন জোজো এসে বলল, ‘সায়কদা তুমি স্ক্রিপ্ট লিখবে?’। ঐ সময় সময় সকালে ঋত্বিক, বিকেলে ফেলিনি, রাতে গোদার্ড গিলে কিচ্ছু না বুঝে শুতে যাই, ঘুমের মধ্যে মনমোহন দেশাই টুকি মারে, আমি একলাফে বললাম হ্যাঁ করবো আমাকে অ্যাসিস্ট করতে দিতে হবে। এই ভাবে আমি লেখা শুরু করি। আমি গ্রাজুয়েট হইনি তখনও, কোনো সাংস্কৃতিক চর্চা সেরকম ছিলনা, কেউ কোনোদিন ওসবে উৎসাহ দেয়নি, আমি নিজে পাড়ায় দুবার নাটক করে মজা পেয়ে গ্রুপ থিয়েটার জয়েন করি, আর বাড়িতে অমিতাভ বচ্চনের ডায়লগ মারতুম আয়নার সামনে। আমার যখন স্ক্রিপ্ট লেখার টেস্ট হয়েছিল তখন যাদবপুরের সব ফিলিম স্টাডিজ, তুলনামূলক সাহিত্যের মেয়েরা ছিলো, তবে গিয়েই বুঝেছিলাম এরা পারবেনা, পারেওনি একজন ছাড়া।
কেন লিখছি এসব আসছি সেকথায়, প্রথমে ভেছিলাম অভিনয় করবো, পারতুমও, একদিন আমার কলেজের এক সিনয়রের কথায় অভিনয়ের ইচ্ছাটা তুলে রাখলাম, সেই সময়ই মানিক বাবু দেখা দিলেন। তারপর থেকে এই চলছে।
কিছুই করতে পারিনি এখনও সেই দুঃখেই বোধহয় লিখছি, আর আজকে আমার জন্মদিন। এই দিনটা আমার লাস্ট কবে ভালো কেটেছে ঠিক করে বলতে পারবোনা, দুহাজার বারোতে বোধহয় বেশ কয়েকজন বন্ধু মিলে খেতে গিয়েছিলাম তখন একটু আনন্দ হয়েছিল।
আরো অনেকগুলো ঘটনা মনে পড়ছে কিন্তু সেগুলো লিখে স্মৃতিচারণ ছাড়া আর কিছু হবে কিনা কে জানে, স্মৃতিচারণ করতে আমার ভালো লাগেনা। আমি খেরোর খাতা কিনেছিলাম, মানিক বাবু ওতে লিখতেন শুনে, কিন্তু লিখেওছহিলাম একটা স্ক্রিপ্ট কিন্তু হয়নি। কারণ টারণ গুলো অনেক্তা ব্যক্তিগত অনেকটা হয়ত নিজের অক্ষমতা।
এইখানে এসে আর লিখতে ইচ্ছা করছে না। আমি আগে ডাইরি লিখতাম কিন্তু ডাইরির লেখা গুলো পরে পড়লে দুঃখ ছাড়া আর কিছু হতোনা এটাও সেরকম হয়ে যাচ্ছে। এটাও সেই অসম্পূর্ন ডাইরির একটা পাতার মত হয়ে গেল...  

Tuesday, April 17, 2018

দুঃখু পার্ট 2

কাল কেন দুঃখু করেছিলাম জানেন? লিখতে পারছিনা বলে। আমাকে একজন বলেছিলেন, 'যে লিখবে তাকে এমন হতে হবে যে শুধু গাঁ.. ইয়ে পেছনটা ঠেকাবে আর তরতরিয়ে লিখে চলবে'। 
কথাটা হয়ত উচিৎ কিন্তুক তার যদি তখন বাহ্য আসে? কিম্বা ধরুন লেখা আর পেটে ছুঁচোয় ডন একসাথে মারতে লাগলো তখন? প্রথমটা আমার বহুবার হয়েছে, কমোডে বসলুম আর ব্যাস বাবু এসে দাঁড়ালেন। উনি আবার দাঁড়াতে পারেন না, ঐ ভাবেই আর্কিমিডিসের মত ছুটলাম।
লেখা তো আমার বাপের চাকর নয় যে ডাক দিলেই এসে হাজির হবে। তেমন হলে কি আর কবি বজরায় করে ঘুরে বেড়াতেন? শান্তি নিকেতনে জমি কিনতেন? মানে হল ঠেকালেই হলনা, কোথায় ঠেকাচ্ছি সেটাও বড় কথা।
এখনকার সমস্যাটা অন্য দাদারা, সত্যি বলছি মনে কিছু করবেন না ট্রেনে উঠে বসার জায়গা যদি পাই, না পেলেও দেখি চার রকম গল্পরা তাদের ছানা পোনা, ভাই বোন, বেয়াই বোনাই, জগাই মাধাই, সবাইকে নিয়ে রোজ দাঁত কেলিয়ে নালাসোপাড়া টু দাদর, আর দাদর টু নালাসোপাড়া করছে। আমি শালা ক্যাপসিকামের দর ভেবে আধ পাগলা আর লেখারা এসে কনুইতে সুড়সুড়ি দিচ্ছে কিরকম লাগে ভাবুন।
সবে জানেন, গ্রহরাজ একটু ঠিক হলো, রাহু তো আমার ভালোই, কেতুর সমস্যাটা আমি সামলে নি, ভাবলাম একটু বোধহয় খুড়ো মুখ নামিয়ে দেখলেন। ওমা এমন হল যে অমন স্বাত্তিক বেস্পতি বেঁকে বসলেন। জীবনে ভাল কি কিছু হবেনা!
ট্রেন থেকে নেমে গেলে আবার তেনারা উধাও, কি জ্বালা।
আরো কি কি যেন লিখবো ভেবেছিলাম বাড়ি এসে গেলাম।
*চার রকম গল্পটা পরে লিখব খন।
** একটা লিস্টি করে রেখেছি সেটাও লিখতে হবে।

Monday, April 16, 2018

লেগে থাকা দুঃখুরা ও গঙ্গারাম

গঙ্গারাম কে, কেন, কি বেত্তান্ত এসব নিয়ে বলতে বসলে আর আমার চেনা কিছু মানুষকে দু ছিলিম গাঁজা টানিয়ে দিতে পারলে তারা বই টই লিখে ফেলতে পারবে, আমার অতটা এলেম নেই। 
তবু বলতেই হয়, গঙ্গারাম আমার দুঃখ হলেই আসে। তেমন তেমন দুঃখ হতে হবে... কানের পিছনটা নীল হয়ে যেতে হবে, হাতের তালুটা শুকিয়ে যেতে হবে। তবে দুঃখুর সময় কি হয় আমি নিজেও ঠিক মেপে দেখিনি আর কানের পিছনটাতো দেখাই যায়না।
এবার দুঃখের কথা বলি, দুঃখ অনেক প্রকার আমার তিন রকম আছে, বড় দুঃখু, মেজো দুঃখু আর লেগে থাকা দুঃখু। লেগে থাকা দুঃখুরা আমার সাথে ছোট থেকে আছে। সেই যখন আমি হনুমান সাজতাম আর কাপড়ের ল্যাজটা নেতিয়ে থাকত, তারপর ভাবতাম একদিন ঠিক সকাল বেলা উঠে আমায় আর চশমা পড়তে হবে না, নিশ্চয়ই একবার অঙ্ক পরীক্ষার আগের দিন স্বপ্নে অঙ্কগুলো পেয়ে যাবো... এসব হয়নি কখনও, আর দুঃখ গুলোও পাল্টাতে পাল্টাতে গেছে।
এখনকার দুঃখুগুলো নেহাত মন্দ না, কোনো সময়ই ট্রেন ফাঁকা পাওয়া যায়না, হঠাৎ একদিন দেবগুরু জানালেন তিনি বক্রী হয়েছেন, পায়খানায় বসলে আজকাল দুপুরে কি খাবো চিন্তা করি এসব কি কম দুঃখের! তারপর বছর খানেকের বেশিই হবে বোধহয় স্বপ্ন দেখিনা, দেখলেও মনে রাখতে পারিনা।
লেখাটা এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে বোধহয়, দুঃখু জিনিসটাই এরকম লেবড়ে দেয়।
এটা আসলে একপ্রকার স্বীকারোক্তি, গঙ্গারাম আসলে আমার পুরোনো কথা মনে পড়ে যায়। গঙ্গারাম চরম দুঃখের সময় এসে কিছুই বলেন না, ঠায় তাকিয়ে থাকে আমিও তাকিয়ে থাকি তারপর আই কন্ট্যাক্ট টা কেটে গেলেই চলে যায়। তবে তাতে আমার কিছু উপকারই হয়।
গঙ্গারামকে আমি ধার করেছিলাম, তা প্রায় একপ্রকার আশীর্বাদও বলা যায়। সে গল্পটা হল, তারাপদ রায় আমার গুরু (মনে মনে), ওঁর একটা চরিত্র ছিল গঙ্গারাম, আমি তাকে নিজের মত করে নিলাম।
গঙ্গারাম যে এসেছিলেন তার কারণ হল, গঙ্গারামের সাথে কথা হওয়ার আগে একটা ভাব তৈরি হওয়া দরকার। তেমন তেমন ভাব তৈরী না হলে কথা জমবে কি করে?
দেখা যাক কি বলে...
পু: একটা গপ্পো প্রতিযোগিতায় গপ্পো দেবো, একটা গপ্পের আউটলাইন লিখে দিতে হবে, গপ্পো গুলো রোজ এসে উকি মেরে যাচ্ছে, আর আমি আজে-বাজে-কাজে মন দিয়ে আছি পয়সা পাচ্ছি বলে, এ কি কম দুঃখু! উনি না এসে যাবেন কোথায়??
পুঃ পুঃ ট্রেন ফাঁকা থাকলে কিরকম লেখা যায় দেখেছেন...খ্যাকস.

Sunday, April 15, 2018

ঐ উলম্ব ভাবে লেখা কিছু শব্দ...কবিতা নয়

কি করব, আমি আর কিছু পারিনা।
যতটা তাকালে পরে দিগন্ত দেখা যায় 
ততটা আমি তাকাতে পারছিনা।
যতটা হাত বাড়ালে আঙুলের ফাঁকে হাওয়ারা হিলি বিলি কাটে 
ছাদের ব্যবধান তার থেকে অনেক কম।
দু চারটে গল্প হত্যে দিয়ে পড়ে আছে, ঘরের বাইরে
রোজ আসতে যেতে হোঁচট লাগে, বলি- 'র' বাপু আর কটা দিন থাক তারপর ঘরে তুলব'।
আগেও বলেছি শব্দরা আমাকে মাঝে মাঝে এমন ভাবে ধরে,
আমি এড়াতেও পারেন, আমি তাড়াতেও পারিনা।
মাঝে মাঝে, না আজই মনে হল,
যদি একবার ফিরে আসব, কথা দিয়ে হারিয়ে যেতে পারতাম বড্ড ভালো হত

কুলের আচার ও পুরাতনী চিঠি

 মনে করুন, এভাবেই সময় চলছে... তাতে তো আর জীবন কাকু থেমে থাকবে না। এগিয়েই যাবে। মনে করুন এরকম ভাবেই ২০২৫ এর বসন্ত এসে গেছে, এভাবেই ঘরে বসে কা...