Friday, August 25, 2017

শারদীয়ার রাতে মাইতলামি

'সেই রাতে'

কাল একটা লেখা পুরোনো ব্লগ থেকে দিয়েছিলুম তাতে লেখা ছিল মানে লিখেছিলাম যে, আমাদের নাকি তেমন হাসির গপ্পো সেরকম কিছু নেই তাতে আমাগো #উইকি পিসেমসাই বলেছেন মানে কিছু স্মৃতি উস্কে দিয়েছেন, এ লেখাটা সেই মহাপ্রাণ কেই উৎসর্গীকৃত হইল।
গপ্পো ১-
আগে একটু ভূমিকা- ২০০৪ এ স্কুল ত্যাগের পর আমার এক বন্ধু বিচ্ছেদ ঘটে। তাও কিছুদিন নেতাজী নগর ডে কলেজে দেখা হত, সে তখন আবার জয়েন্ট দেবার উদ্যোগ করছে আর আমি কি করব জানিনা, শুধু জানি পাসকোর্সে পড়ব না। তারপর ঝপ করে ব্ল্যাক আউট।
কাট টু- একদিন, তখনো সাইকেল চালাই। রাতের দিকে বাড়ি ফিরছি, তখন ২০০৯ এর গোড়া খুব সম্ভব, আমার এই মহাপ্রাণ বন্ধুটির সাথে রাতের শেষ আড্ডাটা মেরে বাড়ি ঢুকব। তখন আমাদের মোবাইলে মিস কল মেরে ঠিক করা হত কে কোথায় দাঁড়াবে, আদৌ দাঁড়াবে কিনা। একবার মিস কল দিলে আসছি, তুই দাঁড়িয়ে থাক। আর একবার দিলে রাইফেল ক্লাব এর মোড় এরকম বিভিন্ন সাংকেতিক প্রক্রিয়া ছিল যা মানিক বাবু ‘ছিন্নমস্তার অভিশাপ’ এ লিখে যেতে পারেননি।
তা যেই দেখা হল, বলল, “এই প্যাঁচার সাথে দেখা হয়েছিল”। কোন একটা নিমত্রন বাড়িতে ওরা দুজন কোলাইড করে গেছিল। আমার নাম্বারটা প্যাঁচা নামক প্রাণীটিকে দেওয়া হয়েছে। তারপর ফোন, তখনও ফেসবুক সেরকম জনপ্রিয় হয়নি আমার বান্ধবী টান্ধবীও জোটেনি সেরকম তাই আমাদের ‘রাম-ভরত’ মিলাপ ঘটল মালঞ্চ সিনেমা হলে ‘রবনে বানাদি জোড়ি’ সিনিমা দেখা দিয়ে। ৪ বচ্ছরের বিরতির পর।
এরপর জন্মদিন, বিয়েবাড়ি, পুজো-পাব্বন, উৎসবে উপহারে আমরা মিলিত হতাম, রাণীকুঠি পুকুরপাড়, রাউলস ইত্যাদি জায়গায় মাল খেতে যেতাম, উফ সে কি দিন ছিল।
সব ভালরই একটা শেষ থাকে আমাদের শেষ হল মনে হয় ২০১৩ তেই। আমাদের গ্যাং এ ছিলাম আমরা চারজন আমি, প্যাঁচা, বিশে আর দাঁতের ডাক্তার। এর মধ্যে বিশে ২পেগ এর পর আর খেতনা আর আমার তিন নম্বর পেগ আআর পর থেকেই বলত, “এটার পর আর খাসনি”, দাঁতের ডাক্তার প্রত্যেক পেগের পর জিজ্ঞাসা করত, “তুই কি আর নিবি?”, প্যাঁচা যাই খাক লাস্টে একটা নিট রাম খেতই। সেবার চারজন ছিলাম না, তিনজন। ডাক্তারবাবু পড়তে গেছেন, অগত্যা আমরা তিনজন সপ্তমীর দিন ম্যাগ্নোলিয়ায় ঢুকলাম। বিশে কোনদিন তাল মিলিয়ে খাবার অর্ডার করতনা, করেনা। ও নিজের মত মটন এর কি একটা ডিশ আর সম্ভবত ভডকা বলেছিল। আমি মদের সাথে খাবারের মেনু নিয়ে ‘মোমো’ খাবার পর থেকেই ভীষন সাবধানী, তার উপর আমি তখন পাঁটা ছেড়ে দিয়েছি। প্যাঁচা রাম আর আমি হুইস্কি নিয়ে একটা চলল।
আমরা ঈষৎ টলটলায়মান অবস্থায় বেরোলাম এই ১১.৩০টা নাগাদ, তারপর ইচ্ছা হল একটু হাঁটা যাক। আমরা পার্কস্ট্রীট ধরে রেডরোড হয়ে হাঁটতে হাঁটতে ময়দানের সামনে এসে পড়লুম। 
'সদ্য মাতাল'

Add caption


মাতালে নর্দমা দেখলে শুয়ে পড়ে জান্তুম আমরা মাঠ দেখে ঢুকে পড়লুম কোন দুঃখে কে জানে! মাঠের ভিতর বেশ খানিকটা চলে গেছি, অন্ধকার আর শরতের রাতের গন্ধ মিলেমিশে মাতলামিটাকে একটা পোয়েটিক মোমেন্টামে ঠেলে দিচ্ছে, হঠাৎ দু-দুটো এইয়া বড় আলো এসে আমাদের উপর পড়ল আমি তো ঘাবড়ে গেছিলাম, বিশের কথা জানিনা ঐ আমাদের কান্ডারী হুশিয়ার ছিল, প্যাঁচা নির্ঘাত ভেবেছিল এইবার ‘ইউ.এফ.ও’ এসে গেছে ও বঙ্কুবাবু হয়ে গেছে। বিশেষ ভাবতে হয়নি বিশে বলল, “পুলিশ, ময়দানে ঢোকা বারণ ভুলে গেছিলাম”। আমার মনে মনে তখন ‘গাঁড় মারাগেছে’। এগিয়ে চলছি আমরা পুলিশ ভ্যানের উদ্দেশ্যে, হঠাৎ আমি ফিল করলাম আমার নিম্নাঙ্গে কোন সার নেই, এ একটা অদ্ভুত অনুভূতি হলে বুঝবেন। আমি বললাম, “ভাই আমার না বিচিটা আস্তে আস্তে ক্যামন ছোট হয়ে আসছে”। বিশে- “চুপচাপ এগিয়ে চল”। সে যাত্রায় পুলিশ বুঝতে পেরেছিল আমাদের কাছে গাঁজা, মদ, কোকেন, চন্ডু-চরস কিচ্ছু নেই আর আমরা ‘আদু’ ইয়ে কদু, তাই বলল, “যাও বাড়ি চলে যাও”।  না বললেও যেতাম কারণ নেশা ফেশা ফেটে যা-তা অবস্থা।
পুলিশ রাশিয়ান স্যালাড ফ্যালাড এর চক্করে মালের গন্ধটাও পায়নি।

বিঃদ্রঃ – এরপর আরো একটা বা দুটো লিখব। 

No comments:

Post a Comment

কুলের আচার ও পুরাতনী চিঠি

 মনে করুন, এভাবেই সময় চলছে... তাতে তো আর জীবন কাকু থেমে থাকবে না। এগিয়েই যাবে। মনে করুন এরকম ভাবেই ২০২৫ এর বসন্ত এসে গেছে, এভাবেই ঘরে বসে কা...