আমি কয়েকটা বাংলা সিরিয়ালে স্ক্রিপ্ট ডায়লগ এসব
লিখেছি, একটা সুপারহিট বাংলা সিনেমায় সহকারী পরিচালক হিসাবে কাজ করেছি, কাজ কিছুই
করিনি শুধু দেখেছি আর বোঝার চেষ্টা করেছি। এবার আমি তেমন কিচ্ছু করে উঠতে পারিনি,
অনেকে আমার গল্প টল্প পড়ে উত্তেজিত হলেও সে গল্প বালিশের তলাতেই রয়ে গেছে, তবু
কেউ জিজ্ঞাসা করলে বলে ফেলি আমি স্ক্রিপ্ট লিখি। কেউ কেউ বেশ ফেনিয়ে গল্প জুড়ে
দেয়, এই বিষয়টা নিয়ে বাঙালীর সবার একটা না একটা মতামত আছেই। আবার কেউ কেউ একটু
বেশি পোঁয়া পাকা জিজ্ঞাসা করে, কোথা থেকে শিখলে? উত্তর অনেক রকম হতে পারে, দিতেও
ইচ্ছা করে, তবু নিজের আয়নায় অবয়বটা পাল্টায়নি বলে যা ঘটেছে তার থেকে আংশিক বলি।
আমি তখন ল’কলেজে পড়ি থার্ড ইয়ার, কলেজের ম্যাগাজিনের জন্য লিখতে
বলেছিলো। সেইসময় কালবেলা নামে একটা সিনেমা বেরিয়েছিলো গৌতম ঘোষের, ঐ সিনেমাটা দেখে
ছাত্র আন্দোলন হেন তেন এইসব নিয়ে লিখতে বলেছিলো, আমার লেখাটা আমার মতে তার বিপরীত
মুখী হয়ে গেছিল, কারণ সেই সময় থেকেই বুঝতে পারি আমি বুর্জোয়া। তবু কি করে যেন
লেখাটা হিট করে গেলো। গড়িয়াহাটের প্যান্টালুন্সের পাশে দাঁড়িয়ে আমরা চা সিগারেট
খেতে খেতে আড্ডা মারতাম, একদিন জোজো এসে বলল, ‘সায়কদা তুমি স্ক্রিপ্ট লিখবে?’। ঐ
সময় সময় সকালে ঋত্বিক, বিকেলে ফেলিনি, রাতে গোদার্ড গিলে কিচ্ছু না বুঝে শুতে যাই,
ঘুমের মধ্যে মনমোহন দেশাই টুকি মারে, আমি একলাফে বললাম হ্যাঁ করবো আমাকে অ্যাসিস্ট
করতে দিতে হবে। এই ভাবে আমি লেখা শুরু করি। আমি গ্রাজুয়েট হইনি তখনও, কোনো
সাংস্কৃতিক চর্চা সেরকম ছিলনা, কেউ কোনোদিন ওসবে উৎসাহ দেয়নি, আমি নিজে পাড়ায়
দুবার নাটক করে মজা পেয়ে গ্রুপ থিয়েটার জয়েন করি, আর বাড়িতে অমিতাভ বচ্চনের ডায়লগ
মারতুম আয়নার সামনে। আমার যখন স্ক্রিপ্ট লেখার টেস্ট হয়েছিল তখন যাদবপুরের সব
ফিলিম স্টাডিজ, তুলনামূলক সাহিত্যের মেয়েরা ছিলো, তবে গিয়েই বুঝেছিলাম এরা
পারবেনা, পারেওনি একজন ছাড়া।
কেন লিখছি এসব আসছি
সেকথায়, প্রথমে ভেছিলাম অভিনয় করবো, পারতুমও, একদিন আমার কলেজের এক সিনয়রের কথায়
অভিনয়ের ইচ্ছাটা তুলে রাখলাম, সেই সময়ই মানিক বাবু দেখা দিলেন। তারপর থেকে এই
চলছে।
কিছুই করতে পারিনি এখনও
সেই দুঃখেই বোধহয় লিখছি, আর আজকে আমার জন্মদিন। এই দিনটা আমার লাস্ট কবে ভালো
কেটেছে ঠিক করে বলতে পারবোনা, দুহাজার বারোতে বোধহয় বেশ কয়েকজন বন্ধু মিলে খেতে
গিয়েছিলাম তখন একটু আনন্দ হয়েছিল।
আরো অনেকগুলো ঘটনা মনে
পড়ছে কিন্তু সেগুলো লিখে স্মৃতিচারণ ছাড়া আর কিছু হবে কিনা কে জানে, স্মৃতিচারণ
করতে আমার ভালো লাগেনা। আমি খেরোর খাতা কিনেছিলাম, মানিক বাবু ওতে লিখতেন শুনে,
কিন্তু লিখেওছহিলাম একটা স্ক্রিপ্ট কিন্তু হয়নি। কারণ টারণ গুলো অনেক্তা ব্যক্তিগত
অনেকটা হয়ত নিজের অক্ষমতা।
এইখানে এসে আর লিখতে
ইচ্ছা করছে না। আমি আগে ডাইরি লিখতাম কিন্তু ডাইরির লেখা গুলো পরে পড়লে দুঃখ ছাড়া
আর কিছু হতোনা এটাও সেরকম হয়ে যাচ্ছে। এটাও সেই অসম্পূর্ন ডাইরির একটা পাতার মত
হয়ে গেল...
No comments:
Post a Comment