ওমিও বাবুর মা একটা কথা খুব বলতেন, নিজের সম্বন্ধেই, তার নাকি,'ডাইনের দশা'। ও আচ্ছা, গল্পটা শুরু করার আগে একটা ব্যাপার খোলসা করে নিই। ওমিও বাবুর নামের বানান, অমিয় কিন্তু উনি নিজেই নিজের নাম ওমিও উচ্চারণ করেন, তাই সেরকমই থাকল। এবার গল্প, ডাইনের দশার ঠিক মানে ওমিও বাবুর মা কোনোদিন বলতে পারেননি। জিজ্ঞাসা করলেই একগাদা পুরোনো গল্প বিভিন্ন ফরম্যাটে সাজিয়ে বার বার বলতেন, যার মোদ্দা মানে এটাই দাঁড়ায় যে, এক একজনের ভাগ্যের ধরণ এমন হয় যে, আপাত ভাবে তাকে দেখে মনে হয়, সে খুব সুখী কিন্তু আদতে সে যে সুখ চাইছে তা সে কোনোদিনই পাচ্ছেনা, অথচ বাইরে থেকে তাকে হাসিখুশী এমনকি সাধারণ মানুষের যা কষ্টসাধ্য তা সে অনায়াসেই পাচ্ছে বলে মনে হয়। একটা দারুণ বৃষ্টির দিনে নিজের পুরোনো ছাতা হারিয়ে বৃষ্টিতে আধভেজা হয়ে ডাকব্যাকের রেইনকোট খুঁজে পাওয়ার মত ব্যাপার, আর কি!
যাক, এহেন ওমিও বাবু প্রচন্ড জ্যোতিষ বিশ্বাসী, রীতিমত পড়াশুনা করেন, দু'খণ্ডের পরাশরী হোরা শ্রাস্ত্র কিনে এনে ডিকশনারি ঘেঁটে ইংরাজী থেকে বাংলা মানে করে, প্রচুর কিছু জেনেছেন, কিন্তু ডাইনের দশার উপযুক্ত কোনো গ্রহাবস্থান ঠাহর করতে পারেননি। বর্তমানে অমিওবাবু পড়েছেন এক মহাফাঁপরে। মাস ছ'য়েক আগে তার এই সাড়ে পঁয়ত্রিশ বছর বয়সে ওমিও বাবুর মা ইহলোকের মায়া সংবরণ করলেন। ফলস্বরূপ হঠাৎ করে ওমিও বাবু তিন খানা ঢাউস ঘর, একখানা ইয়াবড় ঠাকুর ঘর আর একটা দৌড়াদৌড়ি করে স্নান করা যায় এরকম স্নানঘর সমেত গোটা একটা বাড়ির মালিক হয়ে উঠলেন, এককথায়, অথৈ জলে পড়লেন ওমিও বাবু। ওমিও বাবু চাকরি কোনোদিন করেননি, চাকরি করতে হবে এরকম চিন্তাও তার মাথায় আসেনি কখনও আর তার মা ও কোনোদিন চাকরি করা নিয়ে কিছু বলেননি। চাকরি কেন আর কিছু নিয়েও ত্রিশোর্ধ্ব একজন ছেলের মায়েরা যা যা নিয়ে বলতে পারেন তার কিছুই বলেননি। এরকম অবস্থায় যা হয়, মৎসমুখী কেটে যাওয়ার পর কিছু লোক ওমিও বাবুকে জ্ঞান দিতে এল। সাধারণত এরকম জ্ঞানদাদের উদ্দেশ্যে ওমিও বাবু যা করে থাকেন, অর্থাৎ কিনা দু'কানের যথার্থ ব্যবহার, মস্তিষ্ককে কোনোরকম ব্যাঘাত না করে, তাই করছিলেন। কিন্তু এরমধ্যে একদিন পিলু এসে হাজির, এক ঝুড়ি আম নিয়ে। দেখেই ওমিও বাবুর গা গুলিয়ে উঠল, এই একটি জিনিস যা আমবাঙালী হয়েও ওমিও বাবু সহ্য করতে পারেন না। পিলু এতদিন পর এল, তাই, "আমি আম খাইনা, তুই এসব নিয়ে যা", এটা তিনি বলতে পারলেন না। পিলু এসে মন দিয়ে ওমিও বাবুর বাড়ির দেওয়াল, ছাদ, বারান্দা সব প্রায় দিব্যদৃষ্টি দিয়ে দেখল, তারপর সোফায় বসে একটা বড় সিগারেট ধরাল। এই পিলু মাধ্যমিকে নোটস নিতে আসত, ওমিও বাবুর থেকে, বহু উত্তর বলে দিয়ে বিরক্ত হয়ে, শুধু পিলুর বাবার, "অরে একটু দেইখো, তোমার তো মাথাখান শার্প, অরে একটু উৎরাইয়া দিও, আমার বংশের প্রথম কেউ ম্যাট্রিক পাশ হইবো", এই কথাগুলোর জন্য ওমিও বাবু কোনোদিন ওকে ত্যাগ করেননি। তাতেও, মাধ্যমিকে পি ডিভিশন পেল, তারপর কোনোমতে দু'বারের চেষ্টায় হায়ার সেকেন্ডারি পাশ করেই, ইট, বালি, সিমেন্ট এর ব্যবসায় নেমে গেল। দুটো তিনতলা বাড়ি এখন ওর, পিলু এখন নাকি নামকরা বিল্ডার। বিল্ডার কথাটার সাথে বডির একটা অদ্ভুত যোগ আছে, যেকোন বিল্ডারদের একটা বিশেষ বডি ল্যাঙ্গুয়েজ থাকে, সে লোহা তুলুক, আর বাড়ি তুলুক। পিলু সিগারেটের ধোঁয়া সিলিং এর দিকে উড়িয়ে, কলারটা একটু তুলে বকলসের মত একটা সোনার হারকে গলার মধ্যেই গুছিয়ে নিয়ে, বলল," এবার কি করবি?"
এতদিন সবাই কি করতে হবে বলে দিচ্ছিল, এই প্রথম কেউ ওমিও বাবু কি করতে চায় জানতে চাইল। এরকম প্রশ্ন আসতে পারে, ওমিও বাবু ভাবেন নি, কি করবেন তাও ভাবেন নি। নেড়া মাথাটায় হাত বুলিয়ে, গোবেচারার মত মুখ করে তাকালেন। পিলু বলল, "ইনকাম পাতির কি ব্যবস্থা তোর? কাজ বাজ তো কিছু করিস না?" ওমিও বাবুর বাবা এবং তারপরে মা ওমিও বাবুর জন্য একটা মাসোহারা পাবেন এরকম ব্যবস্থা করে গেছেন, আর মা বলে গেছেন এলাইসির দালাল সমীর বাবুর সাথে কথা বলতে, উনিও সম্ভবত আজকালের মধ্যেই আসবেন।
-শোন তুই ছোটবেলার বন্ধু, আর আমায় অনেক হেল্প করেছিস তাই তিনটে কথা বলব, পিলু বলে চলল।
-অনেকে ভাবে পিলু সরকার, অতীত ভুলে গেছে, সেটা ঠিক না। পিলু সরকার কখন কোথায় কি করতে হয় সেটা জানে।
বলে নিজের মনেই হাসল একটু, আবার কলার ঠিক এবং সোনার বকলস গুছিয়ে নিল। এরকম সময় সময়োপযোগী অভিব্যক্তি ওমিও বাবু করতে জানেন না। তিনি একটি নাতিবৃহৎ হা মুখ নিয়ে পিলুর কথা শুনতে লাগলেন।
-শোন, তুই যা ছেলে একা সামলাতে পারবি না। এ বাড়িও সামলাতে পারবি না। ভাবিস না আমি তোর বাড়ি হরপাতে এসেছি। তবে হ্যাঁ একটা ডিল দেব। আমার এক চেনা বিল্ডার আছে, তার এক আইবুড়ো মেয়ে আছে, কিছু একটা কারণে বিয়ে হয়নি, সেটা তোর জেনে কোনো লাভ নেই।
এই পর্যন্ত বলে পিলু কি একটা ভাবল, তারপর আবার শুরু করল।
- সোজা কথা হল তোর একটা বিয়ে করা দরকার। এবার তোকে অন্ধকারে রেখে এই পিলু সরকার কোনো গেম খেলবে না। তোর এই বাড়িটা দেখেই ঐ ভদ্রলোক রাজি হয়ে যাবে, আর মেয়েটারও একটা বর চাই। তোর রেগুলার ইনকামে মেয়ে বা তার বাপের কোনো ইন্টারেস্ট নেই, উল্টে তোকে ওরা রাজার হালেই রাখবে। বড় রাস্তার ওপরে মেয়ের নামে তিন তিনটে থ্রি বিএইচকে ফ্ল্যাট আছে আমি একটা তোর নামে লিখিয়ে দেওয়ারও ব্যবস্থা করে দেব।
ওরকম হ্যাবলা মুখেই চেয়ে রইলেন ওমিও বাবু, তিনি শুনলেন বা বুঝলেন কিনা কিছুই পিলু বুঝতে পারল না।
- এই বাড়িটার বদলে, একটা থ্রিবিএইচকে মোটেই খারাপ ডিল নয়, উল্টে বিয়ে থা করে একটা সেটেলমেন্ট। ভেবে বলিস, আমি কিছুদিন পর আসব আবার। হ্যাঁ কিছু প্রয়োজন হলে বলিস, আমি ব্যবস্থা করে দেব।
ওমিও বাবু নিজের ছকে দেখেছেন, তার বুধ নীচস্থ, দরকারী সময় কিছুতেই ঠিক কথা, ঠিক প্রশ্ন করতে পারেন না। পিলুর গোটা গল্পটায় অনেক গুলো প্রশ্ন করার জায়গা ছিল, যেমন, কি যোগ্যতায় তিনি বিয়ে করবেন, পিলুর কথায় কেন এক ভদ্রলোক তার মেয়েকে ওমিও বাবুর সাথে বিয়ে দেবেন, বর যার চাই সে ওমিও বাবুকে কেন পছন্দ করবে, 'বর চাই' কথাটা যেন কেমন একটা শোনাচ্ছে ইত্যাদি আরো কিছু। কিন্তু এতদিন যারা, "একটা কাজ করো এবার ওমিও", বা "এবার একটা বিয়ে করে ফেলো ওমিও, বাড়িটার ছিরি ফিরবে" বলেছে তারা শুধু করতে বলেছে, পিলু কিন্তু করিয়ে দেবে বলেছে। পুরো ছোটবেলার দানের প্রতিদান, "আমার খাতা দেখে টুকে নে"-র বদলে, 'আমি তোর বিয়ে করিয়ে দেব"। এই ব্যবস্থাটা ওমিওবাবুর একপ্রকার ভালো লাগল, তবে একবার বিয়ে করাটা জ্যোতিষ মতে উপকারী হবে কিনা দেখে নেওয়া দরকার বলে তিনি নিজের ছকটা একবার খুলে বসলেন। দেখলেন তার বিয়ে ব্যাপারটা বেশ বেশি বয়সে হবে, তবে সাড়ে পঁয়ত্রিশ বছর বয়সটা বেশির দিকে কিনা এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারলেন না।
দিনসাতেক বাদে, পিলু আবার হাজির, ওমিও বাবুর আর ওকে কিছু জানানো হয়নি, ওকে দেখেই মনে পড়ল। এবার ওর সাথে একজন লোক, লোকটাকে ছোটবেলায় দেখলে নির্ঘাত ওমিও বাবু ভয় পেতেন এরকম দেখতে। এর নাম নিশিকান্ত সাহা, ইনিও বেশ ঘুরে ঘুরে বাড়িটা দেখলেন। কথাবার্তা যা হল, তাতে এই দাঁড়াল যে, বাৎসরিকটা মিটলেই বিয়ে হবে, বিয়ের দিনক্ষণ সব তিনিই বুঝে টুঝে নেবেন।
এর আবার মাসখানেক পরে, পিলুর ফোন এল, জিজ্ঞাসা করল, ওমিও বাবুর মেয়েকে দেখার কোনো ইচ্ছা আছে কিনা! নারী চরিত্রের সাথে ওমিও বাবুর প্রায় সম্পর্ক নেই বললেই চলে, গল্প উপন্যাস পড়ারও তেমন অভ্যাস নেই ওমিও বাবুর। কিন্তু কি এক ইচ্ছায় তিনি হ্যাঁ বলে দিলেন।
নির্দিষ্ট দিনে, তিনি একটি নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছলেন, প্রিয়াঙ্কা ভালোনাম আর পিঙ্কি ডাকনামের একটি মেয়ে এল, মেয়ে বলার চেয়ে মহিলা বলাই ঠিক হবে এরকম মনে হল ওমিও বাবুর। কথা বলার সময় খুব হাসেন পিঙ্কি, হঠাৎ ওমিওবাবুর মনে হল, পিঙ্কির সাথে আগে দেখা হলে ভালো হত, কলেজে মেয়েদের দেখলে বিভিন্ন বন্ধুর মধ্যে যে উত্তেজনা উনি দেখেছিলেন বা অনুভব করেছিলেন, তা যেন আজ নিজের মধ্যে অনুভব করছেন। মনে মনে বিয়ের জন্য রাজি হয়ে গেলেন ওমিও বাবু। কি মনে করে উনি, পিঙ্কির কাছে তার জন্ম তারিখ, সময় গুলো চাইলেন। পিঙ্কি ভুরু কুঁচকে জিজ্ঞাসা করল, "কেন চাইছ এসব"? তারপর হঠাৎ করেই পিঙ্কির একটু তাড়া এসে গেল। সেদিনের মত বাড়ি চলে এলেন ওমিও বাবু। পরেরদিন আবার পিলুর ফোন, ওমিও বাবু বললেন, তিনি নিজেই একটু জ্যোতিষ চর্চা করেন। এতে পিলু কিছুটা আশ্বস্ত হল। কিছুক্ষন পর আবার ফোন এল এবং পিঙ্কির জন্মের তথ্যাদি ওমিও বাবু পেলেন, সাথে তাগাদা, "কি দেখলি জানাস"।
ওমিও বাবু প্রথমে নিজের সাথে পিঙ্কির বিবাহ কুন্ডলী মিলিয়ে দেখলেন, ৩৬টা গুণের মধ্যে ২৭টা মিলে গেছে। খারাপ কিছু দেখতে পেলেন না ওমিও বাবু। বললেন পিলুকে। ক'দিন পর আবার পিঙ্কির সাথে দেখা হল। এখনও বিয়ে হতে ৮/৯ মাস বাকি, দেখা করতে ভালো লাগলেও বাড়ি থেকে এতদূর আসতে ওমিও বাবুর ইচ্ছা ছিল না, তবু আসলেন। পিঙ্কি আজ কম হাসল। বার বার ওর ফোন আসল, আজ একটু উচাটন যেন ও। জিজ্ঞাসা করল, "তুমি হাত দেখতে পার?"। ওমিওবাবু বললেন, তিনি কুষ্ঠি দেখতে জানেন। আবার কিছুদিন পর দেখা হল, পিঙ্কি সেদিন নিজেই হাত টা বাড়িয়ে দিয়ে দেখতে বলল, যেন চাইলেই ওমিও বাবু দেখতে পারবেন। হাতের দিকে তাকিয়েই ওমিও বাবু গুচ্ছের কাটাকুটি দেখলেন। হাত দেখা শেখা তিনি যে চেষ্টা করেননি, তা নয়, আসলে ঐ বুধ নীচস্থ হলে হাত দেখা আয়ত্ত করা যায়না। কিন্তু পিঙ্কির হাত দেখে কেমন যেন একটা হল।
কি মনে করে ওমিও বাবু আবার একবার পিঙ্কির ছকটা খুলে বসলেন, এবার কি হল, চোখের সামনে ওমিও বাবুর যেন একটা ঘটনা ঝিলিক মেরে উঠল। পিঙ্কিকে গুছিয়ে বলতে না পারলেও, বুঝিয়ে উঠতে পারলেন যে, বিয়ের আগে বা পরে পিঙ্কির জীবনে একটা দুর্ঘটনা বা অশান্তির সম্ভাবনা আছে। পিঙ্কি সেফিন খুব হাসল, ওমিও বাবুর থুতনি ধরে উলিবাবা বলে আদর করে দিল। এরপর দেখলেন, পিঙ্কি হঠাৎ একটু উদার হয়ে উঠল। উপরি পাওনা হিসেবে পিঙ্কি একদিন ওমিও বাবুকে চুমু খেতে শিখিয়ে দিল। হ্যাঁ প্রায় শেখানোই বলা যায়, আর নিজেকে চমকে দিয়ে ওমিও বাবু দেখলেন উনি অসাধারণ চুমু খেতে পারেন। ধাঁ করে, ওমিও বাবু উপলব্ধি করলেন, 'বুধ নীচস্থ মানে ক্ষমতাহীন নয়', কথাটার মানে।
বিয়ে হওয়ার আগে ওমিও বাবু ধীরে ধীরে পুরুষ হয়ে উঠলেন, একদিন আয়নায় একটা ছোট্ট পরিবর্তন লক্ষ্য করলেন নিজের মধ্যে। বুঝতে না পেরে নিজের ছকটাই খুলে বসলেন আর শরীরের মধ্যে একটা শিহরণ বয়ে গেল, তার সন্ন্যাস যোগ রয়েছে বিয়ে করলেই তিনি বরবাদ হয়ে যাবেন। এর মধ্যে পিলুর ফোন এল, ইদানীং কেন কে জানে, পিলু ঘন ঘন ফোন করে আর পিঙ্কির ব্যাপারে জানতে চায়, আর এদিকে পিঙ্কি কি কারণে জানি, রোজই প্রায় কোথাও যেতে চায় ওমিও বাবুর সাথে, একলা।
বিয়ের দিন একটা ছোটখাট খণ্ডযুদ্ধ, লঙ্কাকান্ড এবং দক্ষযজ্ঞ একসাথে হয়ে গেল। পিঙ্কি, নিশিকান্ত বাবু, পিলু আর পিলুর বউ এর মধ্যে। ওমিওবাবু বুঝলেন পিলু আর পিঙ্কির মধ্যে একটা অবৈধ সম্পর্ক ছিল, যা এতদিন পিলুর বউও জানত না, কিন্তু পিঙ্কির বাবা বোধহয় জানতেন। সব শেষে পিলু চোখ রাঙিয়ে বলে গেল, "পয়সার জন্য তুই আমার পেছনে এত বড় বাঁশ দিলি, মনে রাখিস পিলু সরকার, উপকার আর বাঁশ দুটোই সুদ সমেত ফেরত দেয়"।
একটু পরেই পিঙ্কি ঘরে ঢুকে ওমিও বাবুর পা জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে আর বলে, সে ওমিও বাবুকে ভীষণ ভালোবেসে ফেলেছে, তার সমস্ত অপরাধ ওমিও বাবু যেন ক্ষমা করে দেন। যা তিনি অপরাধ হিসেবে ধরেননি তার জন্য ক্ষমা করার প্রশ্নই আসেনা। কিন্তু ওমিওবাবু সেই মুহূর্তে অন্য বিড়ম্বনায় পড়ে গেছেন। তিনি এখন আর বিয়ে করতে চাননা, পাহাড়, পর্বত, জঙ্গল তাকে টানছে। সংসার তার অসার মনে হচ্ছে, একজন গুরুর খোঁজ তার জীবনে অপরিহার্য হয়ে উঠেছে, কামিনী কাঞ্চন তার কাছে বিষ সম। তিনি নাতিবৃহৎ একটি হা মুখ করে, 'ডাইনের দশা'-র প্রকৃত অর্থ উপলব্ধি করতে পারলেন, বরের টোপর মাথায় দিয়ে।